টানা দ্বিতীয়বার দেশসেরা বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘জাভার’

১৯ ঘন্টা আগে
ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্স সম্পর্কিত গবেষণা কাজ তুলে ধরা ‌জার্নাল অব অ্যাডভান্সড ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল রিসার্চ (জাভার) টানা দ্বিতীয়বার দেশসেরার স্বীকৃতি পেয়েছে।

২০১৪ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করা জার্নালটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩২টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

 

জার্নালের ইম্পেক্ট ফ্যাক্টর ও র‌্যাঙ্কিং বিষয়ে এডিটর-ইন-চিফ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নাজমুল এইচ নাজির বলেন, ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর একটি সূচক যা নির্দেশ করে, কোনো নির্দিষ্ট বছরে একটি জার্নালের পূর্ববর্তী দুই বছরে প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো গড়ে কতবার উদ্ধৃত হয়েছে। এটি একটি জার্নালের মান, গ্রহণযোগ্যতা ও বৈশ্বিক প্রভাব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

তিনি জানান, এক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত ‘ওয়েব অব সায়েন্স’ প্রতিবছর ‘ক্ল্যারিভেট পিএলসি’র মাধ্যমে ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর প্রদান করে। আর বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০০-এর অধিক বৈজ্ঞানিক জার্নাল থাকলেও, মাত্র ৬টি জার্নাল ওয়েব অব সায়েন্সের তালিকাভুক্ত। এই জার্নালগুলোর প্রত্যেকটিরই ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর রয়েছে। এই ছয়টির মধ্যে ‘জাভার’ সবচেয়ে উচ্চ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর অর্জন করেছে— ১.৫। ২০২৩ সালের মতো ২০২৪ সালেও একই ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ধরে রেখেছে জাভার, যা বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক প্রকাশনার ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

 

আরও পড়ুন: কোরাল মাছ গবেষণায় সাফল্য: উপকূলে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে পবিপ্রবি

 

সে অনুযায়ী, জাভার বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টরধারী বৈজ্ঞানিক জার্নাল হিসেবে স্বীকৃত।

 

অধ্যাপক নাজির আরও জানান, স্কোপাস হলো বিশ্বের আরেকটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য বৈজ্ঞানিক ডেটাবেজ, যা নেদারল্যান্ডভিত্তিক। এটি প্রতিবছর বিশ্বের মানসম্পন্ন গবেষণা সাময়িকীগুলোর র‌্যাঙ্কিং ও সূচক প্রকাশ করে। বাংলাদেশের মাত্র ১৩টি জার্নাল এর তালিকায় রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম জাভার অন্যতম। এটি একমাত্র বাংলাদেশি জার্নাল হিসেবে কিউটু র‌্যাঙ্ক অর্জন করেছে এবং দ্বিতীয় বছর ধরে এই অবস্থান বজায় রেখেছে। ভেটেরিনারি (জেনারেল) ক্যাটেগরিতে স্কোপাসের তালিকাভুক্ত ২০০টি জার্নালের মধ্যে জাভার বর্তমানে ৫৮তম স্থানে আছে বলেও জানান জার্নালের এডিটর ইন চিফ।  

 

জাভার’র এডিটর-ইন-চিফ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নাজমুল এইচ নাজির। ছবি সংগৃহীত

 

জাভার কীভাবে কাজ করে?

 

জাভার প্রকাশিত হয় নেটওয়ার্ক ফর দ্য ভেটেরিনারিয়ানস অব বাংলাদেশ কর্তৃক। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জার্নাল, যা দেশ ও বিদেশের খ্যাতিমান বিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। সারা বিশ্বের গবেষকগণ থেকে প্রাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধসমূহ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পিয়ার-রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই, প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সম্পাদনার পরই জার্নালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিটি প্রবন্ধ বিশ্বের নির্ভরযোগ্য ও খ্যাতনামা বৈজ্ঞানিক ডেটাবেজসমূহে অন্তর্ভুক্ত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- স্কেপাস, ওয়েব অব সায়েন্স (ইএসসিআই) পাবমেড, পাবমেড সেন্ট্রাল (পিএমসি) এবং ডিরেক্টরি অব ওপেন এক্সেস জার্নালস্ (ডিওএজে)।

 

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুখবর দিলো ইউজিসি

 

এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অন্যান্য ডেটাবেজ ও তথ্যভাণ্ডারেও জাভারের গবেষণাপত্র নিয়মিতভাবে সংযুক্ত হচ্ছে, যা এর বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা ও মানের প্রমাণ বহন করে।

 

জাভারের এডিটর ইন চিফ অধ্যাপক নাজির বলেন, আমাদের লক্ষ্য জার্নালটির গুণগতমান এমন এক উচ্চতায় উন্নীত করা, যেখানে এটি সংশ্লিষ্ট গবেষণা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি—বাংলাদেশের গবেষণার উৎকর্ষ বিশ্বদরবারে তুলে ধরার একটি কার্যকর মাধ্যম হতে পারে এই জার্নাল। বিশ্বমানের গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও উদ্ভাবনের সেতুবন্ধন তৈরিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা চাই, বাংলাদেশের গবেষকরা আরও বেশি সংখ্যায় তাদের মানসম্পন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশ করে যেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারেন।

 

 

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন