চলুন জেনে নেয়া যাক এক দিনে ঘুরে আসা যায় টাঙ্গাইলের এমন পাঁচটি দৃষ্টিনন্দন জায়গা সম্পর্কে–
মধুপুর জাতীয় উদ্যান
নিরিবিলি কোনো এক বিকেলে গভীর বনে হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি পেতে টাঙ্গাইলের ২০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা জুড়ে রয়েছে মধুপুর জাতীয় উদ্যান। শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রশান্তির খোঁজ পেতে মধুপুর জাতীয় উদ্যানকে সেরা জায়গা মনে হয় প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে। অল্পবিস্তর পরিচিত সংরক্ষিত এই বনে রয়েছে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। ফলে এখানে ঘুরতে গেলে প্রকৃতির কোলে বন্যপ্রাণীদের ছুটে বেড়ানোর দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
কুটিরশিল্পের পণ্য কেনার ইচ্ছা থাকলে উদ্যানের আশপাশের কারিতাস দোকানগুলোতে যাওয়া যেতে পারে। মধুপুর গেলে আনারসের স্বাদ নিতে ভুলবেন-না যেন। এখানকার আনারসের জাত যেমন দেশসেরা, তেমনি দামে সস্তা। ঢাকা থেকে ২ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে মধুপুর শহরে আসার পর কয়েক মিনিট এগোলেই দেখা মিলবে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের।
পীরগাছা রাবার বাগান
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মধ্যে অন্যতম মনোরম স্থান হলো পীরগাছা রাবার বাগান। এখানকার বাগানে সারিবদ্ধভাবে বেড়ে ওঠা বড় বড় গাছ বছরে দুই ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। বর্ষাকালে গাছগুলোতে দেখা যায় সবুজের সমারোহ আর শীতকালে তারা সেজে ওঠে পাতা-ঝরা সৌন্দর্যে। ফলে প্রত্যেক সময়ই বাগানে মাধুর্য বিরাজ করে।
বাগানের ঠিক পূর্বদিকে গেলে পাওয়া যাবে রাবার কারখানা। যেখানে কাঁচা রাবার সংগ্রহ করা থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ, শিট প্রস্তুতকরণের পুরো প্রক্রিয়া দেখার সুযোগ মিলবে। অনুমতি সাপেক্ষে এখানকার ফুলের বাগানঘেরা রেস্ট হাউজে থাকা যায়।
মধুপুর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে পীরগাছা রাবার বাগানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটরবাইকের মাধ্যমে যাওয়া যাবে।
টাঙ্গাইল ডিসি লেক
টাঙ্গাইল ডিসি লেক টাঙ্গাইল শহরে অবস্থিত একটি উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ৩৩ দশমিক ৪৫ একর আয়তনের দৃষ্টিনন্দন ডিসি লেক অবস্থিত।
এখানে রয়েছে ছোট নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ, শিশু পার্ক, ভাসমান মঞ্চ, আর মঞ্চের ভেতরে রয়েছে ফাস্ট ফুড। এ ছাড়া লেকের পশ্চিম পাশে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান রয়েছে। প্রিয়জনকে নিয়ে খানিকটা সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। পাখিদের কৃত্রিম বাসস্থানের পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় পানকৌড়ি দেখা যায় এই ডিসি লেকে। সবুজে সমারোহ, পাখির কিচিরমিচির শব্দে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত জায়গা এটি।
২০১ গম্বুজ মসজিদ
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত ২০১ গম্বুজ মসজিদ। সুসজ্জিত ২০১টি গম্বুজের এ মসজিদে রয়েছে ৮টি সুউচ্চ মিনার, যার মধ্যে ৪টি ১০১ ফুট এবং বাকি ৪টি ৮১ ফুট উচ্চতার। মসজিদের পশ্চিম দিকের প্রাচীরটি এখনও নির্মাণাধীন।
চমৎকার এ মসজিদটি দেখতে বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে গোপালপুর উপজেলায় পৌঁছাতে হবে। তারপর মসজিদে যাওয়ার জন্য যে কোনো স্থান থেকে পরিবহন পাওয়া যাবে।
আতিয়া মসজিদ
টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম আইকনিক ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নিদর্শন হলো দেলদুয়ার উপজেলার আতিয়া মসজিদ। মুঘল ও সুলতানি আমলের অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর এই মসজিদের নকশা একসময় ১০ টাকার নোটে দেখা যেত।
ছোট পরিসরের এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির নির্মাণশৈলী বেশ আলাদা ধরনের। বাংলায় এ ধরনের মসজিদ নির্মাণশৈলী খুব একটা দেখা যায় না। টাঙ্গাইল শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে আতিয়া গ্রামে অবস্থিত এই সুন্দর মসজিদটিতে অটোরিকশায় করে যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: একদিনে ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের মনোরম ৬ দর্শনীয় স্থান
আরও পড়ুন: এক দিনে ঘুরে আসুন গাজীপুরের মনোরম ৬ দর্শনীয় স্থান
]]>