ঋণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে টাকার প্রবাহ বাড়িয়ে বা কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। লক্ষ্য থাকে, কর্মসংস্থানের জোগান দিয়ে সরকার নির্ধারিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করা।
এদিকে নতুন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ। এই লক্ষ্য পূরণে জুলাই মাসে আসছে প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি। কী থাকছে এবারের নীতিতে?
আরও পড়ুন: দুর্বল প্রতিষ্ঠান বাজেট বাস্তবায়নের বড় সংকট: অর্থ উপদেষ্টা
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, মূল্যস্ফীতি জুনের মধ্যে ৬-৭ শতাংশে নেমে এলে এক ধরনের সিদ্ধান্ত হবে। তবে কাঙিক্ষত মাত্রায় না আসলে আগের সিদ্ধান্ত আরও কিছুদিন বজায় রাখা হতে পারে।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতির লক্ষ্য অনুযায়ী মূল্যস্ফীতি, জিডিপি ও ঋণ লক্ষ্যমাত্রা এখনও অর্জিত হয়নি। তবে স্থিতিশীল আছে বিনিময় হার। রেমিট্যান্সে ভর করে বাড়ছে রিজার্ভ। এই স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. এজাজুল ইসলাম বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, মূল্যস্ফীতি, বিনিময় হার, রিজার্ভসহ ব্যাংকিং খাতের চ্যানেলগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এরপর আলোচনা করে অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ করে মুদ্রানীতি ডিজাইন করা হবে। মূল লক্ষ্য থাকবে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা।
আরও পড়ুন: বাজেট জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুধু সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি করে সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বরং বাজার সিন্ডিকেট বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়াতে না পারলে আগামীতে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে। আগামী মুদ্রানীতি ঘোষণার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
২০০৬ সাল থেকে বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও ২০১৯ সাল থেকে তা একবারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। অবশ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে আবারো বছরে দুইবার মুদ্রানীতি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
]]>