জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস সংরক্ষণে অধ্যাদেশ জারি

২ সপ্তাহ আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই-যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীর সই করা এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।


অধ্যাদেশে বলা হয়, ‘যেহেতু তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের বর্ণবাদী, নিপীড়নমূলক ও বৈষম্যমূলক নীতি এবং বাংলাদেশের জনগণকে নির্বিচারে গণহত্যার কারণে মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হইয়া উঠে এবং যেহেতু ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লাখো প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।’


‘যেহেতু জনগণের অব্যাহত সংগ্রাম ও ত্যাগ তিতিক্ষা সত্ত্বেও স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও সুবিচার, মর্যাদাপূর্ণ গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয় নাই।’


‘যেহেতু জানুয়ারি ২০০৯  সাল থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দলীয়করণ, দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়েছে। অন্যায়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধী মত দমন, গুম ও বিচার-বহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হয়েছে, দেশের অর্থ পাচার ও লুটপাট নীতির ফলে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী কাঠামোগত সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং জনগণের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ করে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করবার সৃষ্ট প্রেক্ষাপট জনগণকে শঙ্কিত করেছে।’


‘যেহেতু জুলাই ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আপামর জনতার দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ ও বিচারহীনতার ফলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এক দুর্দম গণ-আন্দোলন হতে ক্রমান্বয়ে গণ-অভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট  ফ্যাসিবাদী শাসককে জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।’
 

আরও পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা বদলে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি


‘যেহেতু এই গণ-অভ্যুত্থানে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেছেন এবং দেশব্যাপী সহস্রাধিক নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন, অগণিত মানুষ অতি গুরুতর আহত বা গুরুতর আহত বা আহত হয়েছেন এবং বেশিরভাগই আঘাত ও নৃশংসতার বিভীষিকায় পর্যুদস্ত এবং তাদের এই আত্মত্যাগকে যথার্থ সম্মান প্রদর্শন অপরিহার্য এবং এহেন ত্যাগের দৃষ্টান্ত জাতির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে সমুন্নত রাখা কর্তব্য।’


‘যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত জুলাই-যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত স্বীকৃতি, সম্মান, কল্যাণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

‘যেহেতু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই-যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।’


‘যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে— আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে।’


‘সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন