জীবনে ফিরতে লড়ছে ১৭ দিনের মান্থিয়া

১ সপ্তাহে আগে
মাত্র ১৭ দিন বয়স ছোট্ট শিশু মান্থিয়ার। এরইমধ্যে জটিল জন্ডিস রোগে আক্রান্ত সে। দরিদ্র বাবা ও মার চিকিৎসা করানোর টাকা পর্যন্ত ছিল না। তবে চট্টগ্রামের কিছু চিকিৎসক স্বেচ্ছায় এগিয়ে মানুষের হাত ধরে মান্থিয়া এখন লড়ছে জীবনে ফেরার আশায়। তাদের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় ফ্রিতে এনআইসিইউতে চিকিৎসা চলছে তার।

জানা যায়, জটিল নিউনেটাল জন্ডিস নিয়ে গত ১১ অক্টোবর সীতাকুণ্ডের শীতলপুরে জন্ম নেয় মান্থিয়া। শিশুটির ছিল রক্তশূন্যতা, খিঁচুনি ও ডিহাইড্রেশনসহ নানা মারাত্মক লক্ষণ। একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তবে চিকিৎসা না করিয়ে বাবা-মা তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। কারণ দিনমজুর বাবার সামর্থ ছিল না হাসাতালে ভর্তি করানোর।

 

বাবার অক্ষমতার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মায়া হয় কিছু চিকিৎসকের। রাতের আঁধারে পাহাড়ি পথ মাড়িয় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গিয়াসউদ্দিন টিপুসহ কয়েকজন চিকিৎসক ছুটে যান তার বাড়ি। উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান তারা। পরে কয়েক হাসাপাতাল ঘুরে ভর্তি করা হয় বেসরকারি সাজিনাস হাসপাতালে।

 

বাবা মন্তু কুমার ত্রিপুরা বলেন, আমার টাকা নেই, নিরীহ মানুষ। তাই বাচ্চাকে বাসায় নিয়ে যাই। পরে ডা. টিপু আমার সন্তানকে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

 

আরও পড়ুন: সন্তানদের বুকে আগলে বাঁচতে চান জান্নাত

 

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গিয়াস উদ্দিন টিপু জানান, চেম্বারে আনার পর ফেসবুক একটি ছবি দেই। পরে খারাপ তার বিষয়ে খোঁজ নিতে তার বাড়িতে ছুটে যাই। উদ্ধার করে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসাপাতালে ভর্তি করি। পরে কয়েকটি হাসাপাতাল ঘুরে পরে সাজিনাজ হাসাপাতালে নিয়ে আসা মহয় মান্থিয়াকে। তার শরীরের রক্ত পরিবর্তন করে নতুন রক্ত দেয়া হয়েছে। পরে চিকিৎসা শুরু করি। তার শরীরে মারাত্মক ইনফেকশন ছিল, বেঁচে থাকাটা অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য ছিল।  

 

গত ৭ দিন বাচ্চাটির সঙ্গে ছিলাম জানিয়ে তিনি বলেন, আজ একটু বিশ্রাম করেছি। আমারও যে একটা পরিবার আছে তা ভুলেই গেছিলাম কিছুদিন।

 

আরও পড়ুন: ‘এক টুকরো রুটি চেয়েছিল, না খেয়েই মরে গেল’

 

সোমবার নিজ ফেসবুক পেজে ডা. টিপু লিখেন, বর্তমানে অক্সিজেন ছাড়া মান্থিয়াকে রাখা যাচ্ছে না। ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন সাপোর্ট লাগছে। টিউব দিয়ে খাওয়া দেয়া হচ্ছে মুখে। আগের চেয়ে খাবারের পরিমাণ কিছুটা বাড়নো হয়েছে। আগের চেয়ে তার নড়াচড়াও একটু বেড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ! সবাই দোয়া করবেন। মান্থিয়া এ যাত্রায় বেঁচে ফিরলে মিরাকল হয়ে যাবে। কারণ এ মান্থিয়াকে কোন অবস্থা থেকে তুলে এনে চিকিৎসা শুরু করেছি, আপনারা সব দেখেছেন। আল্লাহ সহায়।

 

চিকিৎসক ডা. তাহমিনা ফেরদৌস তন্নী জানান, মান্থিয়া এখনো বেঁচে আছে, এটাই মিরাক্কেল। শিশুটির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। বর্তমানে সে সাজিনাস হাসপাতালে ভর্তি আছে। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন