জি-২০ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের আলোচ্য বিষয়:২০৩০ সাল নাগাদ ৬০ কোটি মানুষের দারিদ্রমুক্তি

৪ দিন আগে
গ্রুপ অফ টুয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বের ২০টি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের নেতাদের স্বাগত জানাতে ব্রাজিল যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন রিও দ্য জানেইরোতে আরেকটি অনুষ্ঠান হচ্ছে যাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য বিশ্বের নাগরিক সমাজকে একত্রিত করা যায়। ব্রাজিল সরকারের উদ্যোগে এই প্রথম দ্য ব্রাজিল সোশ্যাল সামিট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে  যেখানে বিশ্বের সব স্থান থেকে নাগরিকদের এবং অলাভজনক ও সামাজিক সংগঠনগুলিকে কয়েকটি ছোট ছোট সম্মেলনে অংশ নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।   সব চেয়ে বেশি আলোচিত উদ্যোগটি হচ্ছে ক্ষুধার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জোট বা গ্লোবাল অ্যাল ায়ন্স আগেইনস্ট হাঙ্গার। এই গোষ্ঠী গঠনের প্রস্তাব করেছে ব্রাজিলের সরকার যাতে করে বিশ্বব্যাপী  অনাহারিদের সংখ্যা হ্রাসের  জন্য তহবিল সংগ্রহ ও নীতিমালা প্রয়োগ করা যায়।   ব্রাজিলের উন্নয়ন ও সামাজিক সহযোগিতা , পরিবার ও ক্ষুধা মোকাবিলা বিষয়ক মন্ত্রী ওয়েলিংটন ডায়াস ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন এই উদ্যোগটি যে কোন রাষ্ট্রের জন্য উন্মুক্ত। তিনি বলেন ক্ষুধা ও দারিদ্রের মোকাবিলা জি-২০’র জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ এবং একটি নতুন ঘটনা। ডায়াস বলেন সাম্প্রতিক কভিড মহামারি এবং জলবায়ু পরিবর্তন গোটা পৃথিবীর জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছে। পর্তুগিজ ভাষায় এক সাক্ষাত্কারে ডায়াস বলেন, “ এর ফলে অভিবাসন প্রক্রিয়ায় আরও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে শুরু করি এবং লোকজন জলবায়ু শরনার্থী হিসেবেও অভিহিত হয়। অতএব এ বিষয়টির দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন”। ব্রাজিল, ঘানা, জিম্বাবওয়ে,কেনিয়া, চিলি, ইন্দোনেশিয়া এবং ডমিনিকান রিপাবলিক তাদের কৌশলের রূপরেখা তৈরি করেছে। যে সব দেশ এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে তাদের মধ্যে রয়েছে জার্মানি,ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, নরওয়ে ও স্পেন। তা ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বিশ্বব্যাংক, দ্য ফুড এন্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশান ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মতো সংগঠনগুলিও রয়েছে। প্রস্তাবিত পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে ৫০ কোটি লোককে সাহায্যের জন্য নগদ অর্থ কর্মসূচির সম্প্রসারণ, আরও দেড় কোটি শিশুর  জন্য  স্কুলে খাদ্য বিতরণ এবং ২০ কোটি নারী ও ৬ বছরের কম শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।   ডায়াস  বলেন,“ক্ষুধা নিবারণের জন্য আমাদের যা প্রয়োজন তা যুদ্বের (ও সংঘাতের)  চেয়ে অনেক কম।  এখানে লক্ষ্যটা হচ্ছে প্রতিটি দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী সমাধান দেওয়া। এটা নয় যে ঝুড়ি ভরে খাদ্য বিতরণ বরঞ্চ একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা”।   ব্রাজিলের কর্মকর্তারা বলেছেন আশা করা হচ্ছে এই আর্থিক প্রতিশ্রুতিটি এই জোটের প্রায় ৪০টি দেশের কাছ থেকে আসবে। তা ছাড়া ১৩টি আন্তর্জাতিক সংগঠন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান , ১৯টি বড় জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজের সংগঠনগুলি, বেসরকারি সংগঠনগুলি এবং অন্যান্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ডায়াস বলেন, আশা করা হচ্ছে আগামি মাসগুলোতে এই জোটে তার লক্ষ্য অনুযায়ী ১০০টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হবে এবং ৫০ টিরও বেশি দেশে এতে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে তিনি বলেন এই জোটে যোগ দিতে হলে সেই সব দেশকে ভাল ভাবে সংজ্ঞায়িত পরিকল্পনা এবং প্রমাণিত প্রকল্পগুলি পেশ করতে হবে যা কার্যকর  ভাবে দারিদ্র হ্রাস করতে পারে। জাতিসংঘের মতে, খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতা, অভিবাসন ও এক স্থান থেকে অন্যত্র স্থানন্তরে পেছনে যে উপাদানগুলি কাজ করে সেগুলো হলো সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দারিদ্র। বর্তমান অনুমান হিসেবে দেখা যাচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ ৬২ কোটি ২০ লক্ষ লোক বিশ্ব ব্যাংকের চরম দারিদ্র রেখার নীচে বাস করে যা হচ্ছে প্রতিদিন মাত্র ২ ডলার ১৫  সেন্ট।   এই জোটের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ অন্তত ৬০ কোটি লোককে দারিদ্র থেকে বের করে নিয়ে আসা। জি২০’এর এই সামাজিক প্রস্তাবগুলি চূড়ান্ত নথি হিসেবে তৈরি করা হবে এবং ব্রাজিল আয়োজিত সোম ও মঙ্গলবার জি২০’র নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থাপন  করা হবে।
সম্পূর্ণ পড়ুন