ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর জার্মানির চ্যান্সলর ওলাফ শোলজ শুক্রবার বলেছেন, তিনি নয়াদিল্লির সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং দুই দেশের সামরিক বাহিনীকে আরও কাছাকাছি আনতে চাইছেন।
ঐতিহ্যগতভাবে জার্মানির সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই, তবে ভারত এখন তাদের অস্ত্র ভাণ্ডারের ব্যাপারে রাশিয়ার উপর কয়েক দশকের নির্ভরতা ঝেড়ে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে এবং জার্মানি এই প্রচেষ্টায় যোগ দিতে আগ্রহী। এমন একটা সময়ে এই ঘটনা ঘটছে যখন পশ্চিমারা চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের মোকাবেলা করতে চাইছে।
শোলজ বলেছেন, “আমাদের সামগ্রিক বার্তা সুস্পষ্ট; কম নয়, আমাদের আরও বেশি সহযোগিতার প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের আন্তঃসরকারি আলোচনায় আমরা প্রতিরক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা গভীরতর করতে ইচ্ছুক এবং আমাদের সামরিক বাহিনীগুলিকে কাছাকাছি আনতে সম্মত হয়েছি । ”
শোলজ তার মন্ত্রিসভার অধিকাংশের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বাজি ধরছেন যে, ভারতের বিশাল বাজারে আরও বেশি প্রবেশের সুযোগ পেলে জার্মানির চীনের উপর নির্ভরতা অনেকখানি কমতে পারে।
ভারতে ছয়টি চিরাচরিত ডুবোজাহাজ তৈরি করতে সে দেশের কারখানার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে জার্মানির যে দুটি সংস্থা তাদের একটি হল থাইসেনকর্প। এই চুক্তির অর্থমূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি ডলার।
ভারতীয় নৌবাহিনী জার্মানির সংস্থা বা স্পেনের নাভানতিয়ার মধ্যে একটিকে দ্রুত বেছে নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোদি বলেছেন, নয়াদিল্লি ও বার্লিন পরিবহন অবকাঠামোতে বহু সম্ভাব্য বিনিয়োগের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানী প্রকল্প নিয়েও কাজ করছে।
ভারতের রাজধানীতে জার্মানির শিল্পপতিদের নিয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক সম্মেলনে মোদি বলেছেন, “ভারত সম্পূর্ণভাবে তার ভৌত অবকাঠামো পরিবর্তন করছে।” উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন শোলজ।
মোদি আরও বলেন, “রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এতে জার্মান ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সংস্থাগুলির জন্য সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে।”
.ভারতকে তার জলবায়ু বিষয়ক লক্ষ্য অর্জনে ২০২২ সালে জার্মানি ১ হাজার কোটি ইউরো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার দ্রুত অগ্রগতির জন্য তার অর্থমন্ত্রীর চাপের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন শোলজ।
শোলজ বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী (মোদি), আমি নিশ্চিত যে, আমরা যদি যৌথভাবে কাজ করি তাহলে কয়েক বছর নয়, বরং কয়েক মাসের মধ্যে এটা হতে পারে।”