সকালে খুলনা অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মা শাহজাদী এবং তার মা নার্গিস বেগমের জামিন আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক মো. আনিসুর রহমান জামিন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে চিকিৎসকদের পরামর্শে মায়ের সঙ্গে ওই শিশুকন্যাকে প্রিজন সেলে পাঠানো হয়েছে। দু’জনকে হাসপাতালের পৃথক কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চুরির ঘটনায় ১১ দিন বয়সী কন্যাকে নিয়ে কারাগারে মা
আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করার চেষ্টা করা হবে। মূলত মানব পাচারের মামলায় নিম্ন আদালতে জামিনের এখতিয়ার নেই। মঙ্গলবার মহানগর আদালতে বাদীর আবেদনও তুলে ধরবো। আশা করি জামিন হয়ে যাবে।’
জানা যায়, বাগেরহাটের রামপালের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম ও ফকিরহাটের মেয়ে শাহজাদীর সংসারে চারটি মেয়ে শিশু রয়েছে। গতবছর আবার গর্ভবর্তী হন শাহজাদী। অনাগত সন্তান যেন ছেলে হয়, সেজন্য স্বামী ও পরিবারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশার চাপ ছিল। মেয়ে হলে বিবাহ বিচ্ছেদের হুমকিও ছিল। এমন অবস্থায় ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিজারিয়ানের মাধ্যমে মেয়ে শিশু জন্ম দেন শাহজাদী।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে মাকে অচেতন করে তিন মাসের শিশু চুরি
সংবাদ শুনেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন সিরাজুল। পরের দিনগুলোতে তিনি আর হাসপাতালে যাননি, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও রাখেননি। মেয়ে শিশুর জন্ম দেয়ার নানামুখী চাপে দিশেহারা শাহজাদী ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে একই হাসপাতালে জন্ম নেয়া আরেক রোগীর ছেলে সন্তান চুরি করেন।
নবজাতক চুরির সংবাদে হাসপাতালে তোলপাড় হয়। সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ও পুলিশের তৎপরতা ওই দিন সন্ধ্যায় ছেলে নবজাতকটি উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় শাহজাদীর মা নার্গিস বেগমকে। এ ঘটনায় শাহজাদী ও তার মাকে আসামি করে মানব পাচার আইনে মামলা করেন চুরি যাওয়া শিশুর বাবা মির্জা সুমন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নার্গিস বেগমকে কারাগারে পাঠানো হয়।