জামালপুরে ৩৫ বছরেও হয়নি সেতু, ভোগান্তিতে ১৩ গ্রামের মানুষ

২ সপ্তাহ আগে
জামালপুরের মাদারগঞ্জে যমুনা নদীর ভাঙনে বিচ্ছিন্ন হওয়া এলাকায় ৩৫ বছরেও নির্মাণ হয়নি সেতু। এতে অন্তত ১৩ গ্রামের মানুষের চলাচল ও কৃষিপণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯০ সালের ভয়াবহ বন্যায় যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের নাংলাসহ ১৩ গ্রাম উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তীব্র ভাঙনে মূল নদীর সঙ্গে সংযুক্ত শাখা নদী সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই এলাকাবাসী বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু তৈরি করে যাতায়াত করছে। বর্তমানে এই নড়বড়ে সেতুই অর্ধলক্ষাধিক মানুষের একমাত্র ভরসা।

 

ভুক্তভোগী গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের নাংলা, নাদাগাড়ী, পশ্চিম সুখনগরী, জোড়খালী ইউনিয়নের ফুলজোড়, কাইজের চর ও আতামারী। এছাড়াও বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষও এই পথে চলাচল করে।

 

নাংলা গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আলতাফুর রহমান বলেন, ‘৯০ সালের ভয়াবহ বন্যায় যমুনার ভাঙনে কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখন থেকেই মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সেতু তৈরি করে কোনোমতে চলাচল করছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করে। বর্ষা এলে আবার নৌকায় চলতে হয়। কত কষ্টে আছি, দেখার কেউ নেই।’

 

আরও পড়ুন: জামালপুরে নিখোঁজের পরদিন ধান ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

 

পশ্চিম সুখনগরী গ্রামের আলহাজ মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘৩৫ বছরেও এই নদীর ওপর স্থায়ী সেতু হয়নি। মাদারগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র থেকেই যেন আমরা বাদ পড়ে যাচ্ছি। সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা ১৩ গ্রামের মানুষ। ৭ বার ভোট দিয়েছি, কিন্তু সেতু এখনো হয়নি।’

 

নাদাগাড়ী গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘জামালপুর, গাইবান্ধা ও বগুড়ার হাজারো মানুষ এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু দূর্ভাগ্য, ৩৫ বছরে এখানে একটি সেতুও নির্মাণ হয়নি।’

 

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদির শাহ বলেন, ‘এখানে সরকারিভাবে কোনো সেতু নির্মাণ করা হয়নি। বাঁশের সাঁকো দিয়েই মানুষ যাতায়াত করছে। উপজেলা তহবিল থেকে স্থায়ী সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। তবে এলজিইডি ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করা হবে।’

 

এলজিইডি জানায়, কাঠের সেতুর স্থলে একটি স্থায়ী বেইলি ব্রীজ নির্মাণে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন