জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের ওপর হামলা, সভা পণ্ড

৩ সপ্তাহ আগে
বরিশালে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় নাগরিক কমিটি বরিশালের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের বিবির পুকুর পাড় অ্যানেক্স ভবনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে সড়কে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের হস্তক্ষেপে দুই পক্ষকে আলাদা করা হয়।


জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য ডা. মাহমুদা মিতু অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দোয়া ও অলোচনা সভার আয়োজন করেছিলাম। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের অনুষ্ঠান পণ্ড করে দিয়েছে।’

তিনি আরও দাবি করেন, আমরা বারবার জানিয়েছি, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য। আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু কৃষক দলের লোকজন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় নাগরিক কমিটির ৩ নেতাকে মারধরের অভিযোগ


জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক শাকিল মৃধা বলেন, ‘তাদের আলোচনা সভার মধ্যে একদল লোক এসে আমাদের ‌‌‘আওয়ামী লীগের লোক’ বলে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং হামলা করে আয়োজন পণ্ড করে দেয়। হামলাকারীরা পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’


তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল মহানগর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা মিছিল নিয়ে আসার পথে দেখি, জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে আওয়ামী লীগপন্থিরা সড়ক আটকে প্রোগ্রাম করছে। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে উপস্থিত লোকজন তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেই। মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।’


এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে কর্মসূচি করতে এলে কিছু লোকজন তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এসময় পুলিশও তাদের দুইপক্ষকে দুইদিকে সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়। পরে নাগরিক কমিটির লোকজন কোতোয়ালি মডেল থানায় যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারা ছিল।


থানায় গিয়ে পুলিশের সাথে সাক্ষাত শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বরিশাল মহানগরের সদস্য সচিব মো. শাহাদাত বলেন, ‘নাগরিক কমিটির ভাইদের ওপর হামলা হয়েছে, তাদের নেত্রীসহ কিছু ভাই আহত হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই, সেইসঙ্গে যারা এ হামলার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা অতিসত্ত্বর করার দাবি জানাই।’


তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্তব্যের জায়গা থেকে আমরা এখানে (থানায়) প্রতিবাদ জানাতে এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় সেজন্য এখানে এসেছি।’


তিনি বলেন, ‘হামলার শিকার যারা হয়েছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, প্রশাসনের ভূমিকা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট, কারণ তারা প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়ার পরেও তারা সাহায্য করেনি।  আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি কৃষকদল, শ্রমিকদল এবং যুবদলের পরিচয় দিয়ে বিএনপির স্লোগান দিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হামলা চালিয়েছে।’

আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে দুর্নীতি প্রশ্রয় দেয়া হবে না: জাতীয় নাগরিক কমিটি


উপস্থিত পুলিশ সদস্য রাশেদ বলেন, ‘আচমকা একগ্রুপ এসে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের বলতে পারতো। আমরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু না বলে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে। পরবর্তীতে উভয় গ্রুপকে ওই স্থান থেকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।’


পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা শেষে নাগরিক কমিটির সদস্য সালমান বলেন, ‘আমরা হামলাকারীদের বিচারের পাশাপাশি উপস্থিত পুলিশ সদস্য যারা হামলাকারীদের নিবারন করেনি, তাদেরও শাস্তি দাবি করেছি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন।’


তিনি জানান, এ ঘটনায় ডা. মাহমুদা মিতু লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন