২০১২ সালে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালী শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধে মোট ৩৬টি স্লুইসগেট স্থাপন করা হয়। তবে বর্তমানে এর মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ৪টি, বাকিগুলো দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।
এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এবং সঠিক ও পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। এতে করে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে থাকে দিনের পর দিন।
শহরের বড় মসজিদ রোড, পোস্ট অফিস রোড, বিএডিসি রোড, নবাব পাড়া, নিউ মার্কেট এলাকা- এসব জায়গার রাস্তায় বর্ষা মৌসুমে নিয়মিতই জমে যায় পানি। পানিবন্দি হয়ে পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নেমে আসে ক্ষতির খড়্গ।
নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী শফিক হাওলাদার বলেন, প্রতিবছর দুই-তিনবার নিউ মার্কেট এলাকায় হাঁটুর সমান পানি ওঠে। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হই। বারবার বলার পরও কাজ হয় না। নদী থেকে পানি ওঠা আর শহরের বৃষ্টির পানি বের হতে না পারার কারণেই আমরা পানিবন্দি থাকি। স্লুইসগেটগুলো কোনো কাজে আসে না। দ্রুত এগুলো মেরামত করা জরুরি।
আরও পড়ুন: সামান্য বৃষ্টিপাতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সৈয়দপুর শহরে
৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, শহরে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। স্লুইসগেটগুলো দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এর ফলে বৃষ্টির পানি ড্রেন হয়ে নদীতে নামতে পারে না।
শহরবাসীর অভিযোগ, শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব ছিল। ঠিকভাবে নকশা ও নির্মাণ না করায় কোটি কোটি টাকার এই প্রকল্প এখন অনেকাংশেই অকার্যকর। এর পাশাপাশি জনবল সংকট এবং পর্যবেক্ষণের ঘাটতি থাকায় স্লুইসগেটগুলো রক্ষণাবেক্ষণে ব্যর্থতা দেখা যাচ্ছে।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, স্লুইসগেটগুলো মেরামতের কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে। একইসাথে পৌরসভার ড্রেনগুলোর সংস্কারের বিষয়েও পৌরসভাকে উদ্যোগ নিতে বলেছি।
পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলক সমাদ্দার বলেন, অনেক স্লুইসগেটে সাধারণ মানুষ জাল ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। জনবল সংকট থাকায় সব স্লুইসগেট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুতই দখল মুক্ত করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করা হবে।