জন্মদিনে এক টুকরো রুটি চেয়েছিল কিশোরী কুলুদ, ইসরাইলি বুলেট কেড়ে নিল প্রাণ

৪ সপ্তাহ আগে
গাজার ১৭ বছর বয়সি কিশোরী কুলুদ। গত শনিবার (১৯ জুলাই) ছিল তার জন্মদিন। কিন্তু তার সেই জন্মদিনই মৃত্যুদিনে পরিণত করেছে ইসরাইলি বাহিনী।

গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ইসরাইলি বাহিনীর গুলি চলছেই। খাদ্য সহায়তার আশায় জড়ো হওয়াদের ওপর দখলদার বাহিনীর গুলিতে ৩২ জন প্রাণ হারান। কিশোরী কুলুদ ছিলেন সেই হতভাগাদের একজন।

 

জন্মদিনে কেক দুরে থাক, ঘরে এক টুকরোও ছিল না। তাই আরও অনেকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল পরিচালিত ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন কুলুদ। আশা ছিল, কিছু আটা পাবেন। কিন্তু আটা তো মেলেইনি, জীবনটাই হারাতে হয়েছে তার। মেয়ের এমন করুণ মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না তার মা।

 

মেয়েকে শেষবারের মত বিদায় দেয়ার পরও থামছে না মায়ের আহাজারি। কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘আমার মেয়েটা মারা গেল ঠিক সেই ঘণ্টায়, যেই ঘন্টায় তার জন্ম হয়েছিল। আজ ছিল তার জন্মদিন। সে সারা দিন ঘুরেছে এক টুকরো রুটির জন্য। চারদিকে ঘুরে ঘুরে বলেছিল, আজ আমি রুটি নিয়েই ফিরব।’

 

আরও পড়ুন: গাজায় অনাহারে মারা গেল ৩৫ দিনের শিশু

 

ইসরাইলের অবরোধ ও মারাত্মক ক্ষুধা নীতির কারণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। রীতিমতো দুর্ভিক্ষ চলছে। লাখ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এক টুকরো রুটির জন্যও মরিয়া হয়ে উঠছে তারা।

 

গাজার কিছু এলাকায় ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত সংস্থা জিএইচএফ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগণ্য। তাছাড়া ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাদ্যের সন্ধানে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের উপর নির্বিচার গুলি চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। তাতে প্রতিদিনই মানুষ মরছে।

 

জাতিসংঘের তথ্য মতে, ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরাইলি গুলিতে এখন পর্যন্ত ৮ শতাধিক ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এমন নিশ্চিত মৃত্যুর আশঙ্কা সত্ত্বেও ত্রাণ সহায়তা কেন্দ্রের সামনে জড়ো হচ্ছে গাজাবাসী।

 

আরও পড়ুন: গাজায় থামছে না ইসরাইলি বর্বরতা, আরও ১১৬ ফিলিস্তিনি হত্যা

 

গত শনিবারও ত্রাণ সহায়তার আশায় লাইন ধরেছিল ক্ষুধার্ত গাজাবাসী। কিন্তু সেই লাইনে আবারও ঝরেছে রক্ত। গাজার খান ইউনিস ও রাফাহর দুটি সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রের কাছে গুলিতে নিহত হন ৩২ জন। আহত হন আরও অনেকেই। হামাস-শাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলিতেই হয়েছে এই প্রাণহানি।

 

খাদ্য বিতরণ শুরুর আগেই আশপাশে ইসরাইলি সেনা অবস্থান নেয় এবং গাজাবাসীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এটা ছিল হত্যার জন্য নিশানা করে গুলি।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন