রোববার (২৫ মে) দুপুরে ঢাকা বন বিভাগের বণ্য প্রাণী পরিদর্শক ও দামুড়হুদা বন বিভাগের সহায়তায় উপজেলার ইব্রাহিমপুর মেহেরুননেছা পার্কে অভিযান চালিয়ে এসব খাঁচাবন্দি প্রাণী উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো বনে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান উপজেলা বন কর্মকর্তা।
দামুড়হুদা উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, দামুড়হুদা মেহেরুন নেছা বেশ কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণীগুলো খাঁচায় বন্দি রাখা হয়। পার্কে আসা দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্যে বন্যপ্রাণী গুলোকে বছরের পর বছর আটকে রাখা হয় নিয়ম বহির্ভূত ভাবে। প্রাণীগুলো বন্দি থেকে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। মেছো বিড়াল ও পেঁচা মারাও যায়।
আরও পড়ুন: বন অধিদফতরের অভিযানে ৭৩ কচ্ছপ উদ্ধার
দামুড়হুদা উপজেলার মেহেরুন নেছা পার্কে একটি মেছো বিড়াল, তিনটি বানর ও একেটি হুতুমপেচা পাখি দীর্ঘদিন ধরে পার্কে প্রদর্শনের জন্য খাঁচাবন্দি ছিল। পার্কে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। পরে তিনি বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবিহিত করেন। এক পর্যায়ে রোববার দুপুরে ঢাকা বন অধিদপ্তরের বণ্যপ্রণী পরিদর্শক অসীম কুমার মল্লিক, আব্দুল্লা আস সাদিক ও এনিমেল কিলার সঞ্জয় বন্ধন, দামুড়হুদা উপজেলা বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, জীবননগর উপজেলা বন কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে মেহেরুন নেছা পার্কে অভিযান চালায়। এসময় সেখান থেকে খাঁচাবন্দি অবস্থায় প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়।
বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আব্দুল্লা আস সাদিক বলেন, বণ্যপ্রাণী আটক করা বা আটকিয়ে রাখা দন্ডনীয় অপরাধ। বণ্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ মোতাবেক এসব বণ্যপ্রণী আটক করে দামুড়হুদা উপজেলা বন বিভাগে আনা হয়েছে। দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয় এই প্রাণীগুলো। বনের প্রাণী খাঁচায় বন্দি রাখা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আজই প্রাণীগুলোকে উপযুক্ত পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে। এ কাজে সহায়তা করেন দামুড়হুদা বণবিভাগের পিএম আহসান হাবিব।
মেহেরুন নেছা পার্কটি পরিচালনা করেন ইব্রাহিমপুর গ্রামের এ আর মালিক। প্রভাবশালী হওয়ায় দীর্ঘদিনেও পার্ক থেকে বন্যপ্রাণী গুলো উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না কর্তৃপক্ষের পক্ষে। বন বিভাগের সাহসিকতায় অবশেষে উদ্ধার হল প্রাণীগুলো। মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবে প্রাণীগুলো আজ থেকে।
আরও পড়ুন: শার্শায় তক্ষকসহ ২ পাচারকারী গ্রেফতার
মেহেরুন নেছা পার্কের মালিক এ আর মালিক জানান, প্রাণীগুলো আজ বন বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়ে গেছে। বন বিভাগের কাছে আমরা লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম প্রাণীগুলো উদ্ধারের জন্য। প্রতিমাসে প্রাণীগুলোর পেছনে খরচ হতো প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আমরা বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেছে এ বিষয়ে।
পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ি প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বকতিয়ার হামিদ বিপুল জানান, ইব্রাহিমপুর পার্কে প্রাণীগুলো অসহায় অবস্থায় বন্দি ছিল। প্রাণীগুলোর রুগ্ন অবস্থায় থাকতো। প্রাণীগুলো উদ্ধার ও অবমুক্ত হয় আমরা খুশি।