শুক্রবার হংকংয়ে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সভাপতিত্বে আইওমেড প্রতিষ্ঠার চুক্তি ‘দ্য কনভেনশন অন দ্য এস্টাবলিশমেন্ট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মিডিয়েশন’ স্বাক্ষরিত হয়।
এ সময় ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, লাওস, কম্বোডিয়া ও সার্বিয়াসহ ৩১টি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি জাতিসংঘসহ প্রায় ২০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ অথবা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে কার্যক্রম শুরু করবে সংস্থাটি।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘আইওমেড’ প্রতিষ্ঠা জয়-পরাজয়ের চিন্তাভাবনার বাইরে গিয়ে আন্তর্জাতিক বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে সাহায্য করবে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরো জোরদার করবে।
অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত একটি ভিডিওতে জানানো হয়, আইওমেড এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের, একটি দেশের সঙ্গে অন্য একটি দেশের নাগরিকদের এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তিতে সালিশি বা মধ্যস্থতা করবে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়ায় নৌবাহিনীর বিমান বিধ্বস্ত, সব আরোহী নিহত
চীনের রাষ্ট্রীয় পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস-এ প্রকাশিত একটি মতামত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইওমেড হলো বিশ্বের প্রথম আন্তঃসরকারি আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থা যা একমাত্র সালিসির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে নিবেদিত হবে।
হংকংয়ের মুখ্য নির্বাহী জন লি কা-চিউ বলেন, আইওমেড-এর মর্যাদা জাতিসংঘের আইসেজে (আইসিজে) ও পার্মানেন্ট কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন-এর সমমানের হবে। এটি হংকংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সুবিধা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দেবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে হংকংয়ের বিচার সচিব পল ল্যাম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট-এ লেখা এক মতামত লেখায় বলেন, আইওমেড হংকংয়ের ওপর ‘বাইরের বৈরী শক্তিগুলোর চাপ’ মোকাবিলায় সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ‘এক দেশ, দুই নীতি’ কাঠামোর অধীনে হংকংয়ের আন্তর্জাতিক বৈধতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে আয়োমেড একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হবে।
জাতিসংঘের প্রধান বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আইনি বিরোধ সমাধানের শীর্ষ সংস্থা। এটি জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পাঠানো আইনি প্রশ্নগুলোরও পরামর্শমূলক মতামতও প্রদান করে।
আরও পড়ুন: ‘আধিপত্যবাদ’ / ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের নতুন ফিল্ড মার্শাল
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে হংকং চীনের অধীনে ফিরলেও গত এক দশকে বেইজিংয়ের কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও গণতান্ত্রিক অধিকার সংকোচনের ফলে অঞ্চলটির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। এই প্রেক্ষাপটে চীন আয়োমেড-এর মাধ্যমে হংকংকে আবারও একটি আন্তর্জাতিক আইনি ও কূটনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।
]]>