এর আগে মঙ্গলবার (৩ জুন) সন্ধ্যায় শহরের নারায়নপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কথিত ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে সদর থানার পুলিশ।
এএইচএম নোমান সদর উপজেলার নারায়নপুর এলাকার মৃত রহুল আমীনের ছেলে এবং নতুন সময় টিভি, দৈনিক বাংলা সংবাদ ও দৈনিক জামালপুর দিনকালের শেরপুর জেলা প্রতিনিধি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের ইদ্রিস গ্রুপ অব কোম্পানীজ লিমিটেডের কর্মকর্তাদের কাছে ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে একাধিকবার মিথ্যা খবর প্রকাশ ও মিথ্যা মামলায় আসামি করার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করেন করে আসছেন কথিত ওই সাংবাদিক। ২৩ মে ইদ্রিস গ্রুপের মিডিয়া কর্মকর্তা রাজাদুল ইসলাম বাবুর কাছে মিথ্যা খবর প্রকাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তা বাদী হয়ে সদর থানায় চাঁদা দাবি ও আদায়সহ নানা হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে এএইচএম নোমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের লেখার স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান: অমিত
মঙ্গলবার (৩ জুন) সদর থানায় দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এএইচএম নোমানকে গ্রেফতার করে। পরে বুধবার আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয় তাকে।
জানা গেছে, কথিত এই সাংবাদিক দীর্ঘদিন ধরে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে আসছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোমানের বেশি কিছু কল রেকর্ড (অডিও ক্লিপ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে শোনা যায়, তিনি এক ব্যাক্তিকে বলেন, ‘আমি নোমান শেরপুরের ওয়ান পিস। আমি এক বারের বেশি কাউকে ফোন দেই না, আমি ডিসিকেও একবারের বেশি ফোন দেই না, ডিসি ফোন না ধরলে চাকরি খেয়ে দেই।’ শেরপুরের জেলা প্রশাসককে নিয়ে এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। এ নিয়ে ওই কথিত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি ওঠে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে।
এ ব্যাপারে শেরপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা বলেন, সাংবাদিকতায় কেউ নতুন কেউ এলে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু একটি আইডি কার্ড সংগ্রহ করে কেউ নিজেকে সাংবাদিক দাবি করে মানুষকে হয়রানি ও চাদাঁবাজি করার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারি না। এসব কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: শেরপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ২
প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল বলেন, সাংবাদিকতার নামে মহান এ পেশাকে যারা কলুষিত করবে তার পাশে আমরা দাঁড়াতে পারি না। বরং আমরা এ অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শেরপুরের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দাবি এবং আদায়ের অভিযোগে কথিত এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।