নতুন করে কোনো নালিশী মামলা রুজু হচ্ছে না। গ্রেফতার বা আটক আসামিদের বিষয়ে আইনি সমাধানেও দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুপস্থিতিতে করণীয় নিয়ে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট নিদের্শনাও। এ অবস্থায় আসামি ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে আদালত সংশ্লিষ্ট পুলিশকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানকে গত ২৮ নভেম্বর ঢাকায় বদলি করা হয়। তার পরিবর্তে চরফ্যাশন আদালতে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করা হয়নি। ভোলা সদরের একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাময়িক দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে চরফ্যাশন জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে বর্তমানে ৬৬৮টি সিআর মামলা বিচারাধীন। জিআর মামলা আছে ৩৭৪টি। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বদলির পর নতুন কোনো সিআর মামলা না হলেও ২৮ নভেম্বর থেকে ০৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আর ৮টি জিআর মামলা রুজু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাবেক কৃষিমন্ত্রীর দিকে ডিম মারলেন শিক্ষার্থীরা
চরফ্যাশন বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাইনুল ইসলাম নাবিল সরমান জানান, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অহেতুক হয়রানির শিকার হচ্ছেন মামলার আসামিপক্ষ। থানা পুলিশের দায়ের করা মামলাগুলোর জামিন চাওয়া নিয়ে যেমন বিড়ম্বনা হচ্ছে তেমনি জামিনযোগ্য মামলায় আসামিরা অযথা জেল খাটছেন। সামান্য কারণেও চরফ্যাশন থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের জেলা সদরের আদালতে নিতে হচ্ছে মামলার নথিগুলো।
মামলা সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানান, থানা থেকে এফআইআর হওয়া কিছু মামলায় আসামি গ্রেফতার হলেও ম্যাজিস্ট্রেট না থাকা যথাসময় উপস্থাপন ও শুনানি করা যাচ্ছে না। পুলিশের ধরে আনা (গ্রেফতার) আসামিদের ফরোয়াডিং করা ও ভিকটিমের জবানবন্দি নেয়াও বন্ধ আছে।
চরফ্যাশন আদালতের এপিপি মো.লিটন হাওলার বলেন, ‘আদালতে চলমান মামলার সাক্ষী জানানো যাচ্ছে না ও নতুন কোনো মামলাও রুজু করা যাচ্ছে না। এছাড়া গ্রেফতার করা আসামিদের জামিন চাওয়া নিয়ে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। সামান্য কারণে ৭০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বিচারপ্রার্থীদের জেলা সদরে যেতে হচ্ছে। এতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ। বিচারাধীন মামলা গুলোর বিচারকির কার্যক্রম কার্যত বন্ধ থাকায় অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে চরফ্যাশন জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালত। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বিচারপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিভাগে ৪ লাখ মামলার জট, নিষ্পত্তি কবে?
আদালতের জিআরও মাসুম তালুদার জানান, ভোলা চিফ জুডিশিয়াল আদালত থেকে নথি পাঠানোর কোনো আদেশ না পাওয়ায় মামলার নথি পাঠানো যাচ্ছে না। আদেশ পেলে জিআর মামলার নথি জেলা সদরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক জানান, এ বিষয়টি সমাধানে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নাই। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটর পদ শূন্য থাকায় আদালতের বিভিন্ন কাজ করতে চরফ্যাশন থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের জেলা সদরের আসতে হচ্ছে। এতে পুলিশের খাটুনি ও যাতায়াত খরচ বেড়েছে।