সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চবি ল্যাবরেটরি স্কুলের বিপরীতে সিয়াম প্যালেস নামে একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। মরদেহটি জানালার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও, পা মাটিতে লেগে থাকায় মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, লাবিবা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসাটি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। তিনি প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় ছয়টি কোর্সে অকৃতকার্য হয়ে ড্রপ-আউট হন। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
ঘটনার দিন সকালে ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে বাসার গৃহকর্মী তাকে জানালার পাশে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
গৃহকর্মী বলেন, ‘লামিয়া আপু জানালার সঙ্গে ঝুলে ছিলেন। কিন্তু তার পা মাটিতে ছিল। আমি এখনও বুঝতে পারছি না, কিভাবে মারা গেল। ফাঁসি দিলে তো ঝুলে থাকতো। এরপর তার বাবা-মা মরদেহটি নিচে নামিয়ে বিছানায় শুইয়ে রাখেন। খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন ও হাটহাজারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, বাবা-সৎ মা পলাতক
চবির সহকারী প্রক্টর নূরুল হামিদ কানন বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি, মরদেহ নামিয়ে নিচে শুইয়ে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।’
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাউসার বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এসে আমরা মেয়েটির মরদেহ জানালার পাশে মাটিতে শুয়ে থাকা অবস্থায় পাই। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
এদিকে, মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। শাখা ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী এটি আত্মহত্যা নয় বলে দাবি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটা মেয়ে জানালার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে! কি হাস্যকর!’
আরও পড়ুন: মেডিকেলে চান্স না পেয়ে দীর্ঘ হতাশা থেকে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমি তাকে যতটুকু জানি, সে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, দ্রুত সময়ের মধ্যে তার মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটন করা হোক।’
লামিয়ার বান্ধবী তনিমা বিনতে হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালীন এমন কিছু করবে তা কখনো ভাবিনি। তবে একাডেমিক কারণে সে অনেকদিন ধরেই ডিপ্রেশনে ছিল। মেয়েটির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো রহস্য; এ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।’
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা যাবে জানান হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাউসার।