সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচের পরও জলাবদ্ধতা নিরসন না হওয়ায় সমাধান খুঁজতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪ উপদেষ্টাকে বিশেষ দায়িত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর চট্টগ্রাম ছুটে গিয়ে নালা খাল পরিদর্শন করে ৮টি স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তারা।
বর্ষার আগেই সহনীয় পর্যায়ে আসবে জলাবদ্ধতা। ১৭টি খাল খননসহ সমন্বিতভাবে কাজ করার কথা জানান সিটি মেয়রও। এর ৪ মাস পর কাজের অগ্রগতি দেখতে নগরীতে বেশি জলাবদ্ধতা হয় এমন তিনটি স্থানে সরেজমিনে ঘুরেছে এ প্রতিবেদক।
আরও পড়ুন: আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবল ১ কিলোমিটার সড়ক!
দেখা যায়, ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট ১৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল চট্টগ্রামে। তখন নগরীর বহদ্দারহাট-মুরাদপুর ডুবে গিয়ে জনজীবনে নামে ভোগান্তি। কিন্তু ২০২৫ সালে ৩০ মে ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয় ১৬৭ মিলিমিটার। ডোবেনি বহদ্দারহাট ও মুরাদপুর। কর্ণফুলী নদীতে জোয়ারও ছিল ওই সময়ে। এ নিয়ে কথা হয় ১২ ঘণ্টা ধরে একই স্থানে কর্মরত এক প্রহরী ও দোকানির সঙ্গে। তারা জানান, নালার ওপর নির্মিত মার্কেট ভেঙে দেয়া ও নালা খাল সংস্কারের কারণেই কমেছে জলাবদ্ধতা।
মুরাদপুর এলাকায় এ ভবনের প্রহরী ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘গত রাত ১২টার দিকে এখানে এসেছি। তখনও থেকে বৃষ্টি। ভোরেও বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কোথায় পানি নেই।’
পরের গন্তব্য চকবাজার। ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম এ এলাকা। কিন্তু (৩০ মে) ভোর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হলেও নেই সেই ভোগান্তি।
চকবাজারের দোকানি মোরশেদুল আলম বলেন, ‘গত রাতে ২টায় দোকান বেঁধেছি। একটু পানি উঠেছিল সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে। ভোরেও প্রচুর বৃষ্টি। কিন্তু দোকানে পানি ওঠেনি। গত বছর এ সময় বৃষ্টিতে এ এলাকা তলিয়ে যায়।’
আরও পড়ুন: কুমিল্লা নগরীতে তীব্র জলাবদ্ধতায় স্থবির জনজীবন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মূলত আমি নালার সঙ্গে খালে সংযোগ স্থাপন করেছি। যাতে পানি নেমে যেতে পারে। মাটি উত্তোলন করা হয়েছে। নগরের যেসব জায়গায় সচরাচর পানি ওঠে, ওই সব জায়গায় খোঁজ নিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোথাও পানি ওঠেনি। এবার আমরা পরিকল্পনা করে খাল ও নালা-নর্দমা খনন করছি। পানিপ্রবাহের পথ পরিষ্কার থাকায় পানি জমেনি কোথাও।’
একইভাবে ২০২৪ সালে ৩০ জুন নগরীর কাতালগঞ্জ ডুবলেও চলতি বছরের ৩০ মে’র বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়নি জলাবদ্ধতা। এছাড়াও আরও তিনটি স্থানে আগে জলাবদ্ধতা হলেও এবার হয়নি। কিছু জায়গায় পানি জমলেও সঙ্গে সঙ্গে নেমে গেছে।