চট্টগ্রামে কালভার্ট ভেঙে দুই ভাগ, তদন্তে চার কারণ চিহ্নিত

৩ ঘন্টা আগে
চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন-দুই নম্বর গেট সড়কের স্টারশিপ এলাকায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নির্মিত কালভার্ট ধসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ঘটনার ২২ কর্মদিবস পর বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

প্রতিবেদনে ধসের জন্য চারটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি করণীয়ও সুপারিশ করেছে কমিটি।

 

তদন্ত কমিটি জানায়, মূলত পুরনো ইটের ফাউন্ডেশনের কালভার্টটি খাল প্রশস্তকরণের কারণে পানির প্রবাহের চাপ সহ্য করতে না পেরে ধসে পড়েছে। এটিই ছিল প্রধান কারণ। এছাড়া কালভার্টের পাশে ড্রেনের পানি দীর্ঘদিন ধরে ফাউন্ডেশনের পাশে ক্ষয় সৃষ্টি, শিল্পাঞ্চল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভারী যানবাহনের চাপ এবং ওয়াসার পাইপলাইন স্থাপনের কাজকে সহায়ক কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৫০ বছর আগে নির্মিত কালভার্টটি আধুনিক ভারবহনক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। সম্প্রতি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও সেনাবাহিনীর প্রকল্পে শীতল ঝরনা খালের প্রশস্ততা ৬ মিটার থেকে ১৩ মিটারে উন্নীত করা হয় এবং গভীরতাও বাড়ানো হয়। এর ফলে বর্ষার সময় পানির প্রবাহের গতি বৃদ্ধি পায় এবং ফাউন্ডেশনের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। এতে কালভার্টের উত্তর পাশের ইটের আবাটমেন্ট ভেঙে পড়ে ও কালভার্টের একাংশ বসে গিয়ে ধসে যায়।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ভেঙে দুই ভাগ ৪৫ বছরের পুরানো কালভার্ট

 

এ ছাড়া কালভার্টের পাশে স্থাপিত ড্রেনের পানি দীর্ঘদিন ধরে ফাউন্ডেশনের ক্ষয় ডেকে আনে, শিল্পাঞ্চল হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভারী ট্রাক-লরি চলাচলে কালভার্টটি অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ে এবং ওয়াসার স্থাপিত ৯০০ ও ১২০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপলাইনের নির্মাণকাজ পুরনো ফাউন্ডেশনের ক্ষতির শঙ্কা তৈরি করে।

 

প্রতিবেদনে সুপারিশসমূহ:

  • খাল পুনঃখনন ও প্রশস্তকরণের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ব্রিজ-কালভার্ট দ্রুত চিহ্নিত করে আধুনিক মানে পুনর্নির্মাণ।
  • খালের গভীরতা বৃদ্ধির ফলে ভেঙে পড়া রিটেইনিং ওয়াল নতুন করে নির্মাণ।
  • নগরে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ও কালভার্টে ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড বসানো।
  • ওয়াসা, গ্যাস, বিটিসিএলসহ সেবা সংস্থার পাইপলাইন বসানোর সময় কালভার্ট ও ড্রেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে সমন্বয় বাড়ানো।

 

চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দ্রুত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেব। যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ভোগ আর না হয়।’

 

উল্লেখ্য, গত ৬ আগস্ট রাতভর বৃষ্টির পর পানির প্রবল ঢলে শীতল ঝরনা খালের ওপর স্থাপিত কালভার্টটি ধসে পড়ে। এতে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন