চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি রাখার জায়গা সংকট, বিকল্প ভাবনায় মোংলা বন্দর

১ সপ্তাহে আগে
স্বাধীনতার পর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই শুরু হয়েছিল দেশে রিকন্ডিশনড গাড়ি আমদানির যাত্রা। কিন্তু এখন সেই গাড়ি রাখার আগ্রহ হারাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অন্তত ৮০ শতাংশ গাড়ি আমদানির পরিবর্তে মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুপারিশ করে ইতোমধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে গাড়ি না এনে যদি সেগুলো মোংলা বন্দরের মাধ্যমে আনে তাহলে মোংলা বন্দরের স্পেসটাও ব্যবহার হলো এবং চট্টগ্রাম বন্দরের ভিতরে যে অপারেশনাল কার্যক্রম সেটাও আমরা আরো ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারলাম।

 

চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি খালাসের পর প্রথম চার দিন বিনামূল্যে রাখা গেলেও, পরবর্তী সাত দিনে প্রতিটি গাড়ির জন্য প্রতিদিন ভাড়া ৭৯৩ টাকা এবং চার্জ ৫০৩ টাকা দিতে হয় আমদানিকারকদের। ১৪ দিন পর থেকে প্রতিদিনের মাসুল দাঁড়ায় ৭০০ টাকা।

 

অন্যদিকে, মোংলা বন্দরে চার দিন বিনামূল্যে রাখার পর প্রথম সাত দিনের জন্য প্রতিদিনের শুল্ক ৪০০ টাকা এবং দ্বিতীয় সাত দিনের জন্য ৭৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর প্রতিদিনের শুল্ক নির্ধারিত ১২৯ টাকা।

 

তুলনামূলকভাবে মোংলা বন্দরের শুল্ক হার কম হলেও সেখানে পণ্য খালাস ও পরিবহনে নানা জটিলতায় আপত্তি তুলছেন ব্যবসায়ীরা।

 

বারবিডার সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যদি গাড়ি না এনে মোংলা বন্দর দিয়ে যদি নিয়ে আসি তাহলে আমাদের কস্টিং চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা কস্টিং বেশি পড়বে ঢাকার ব্যবসায়ীদের তুলনায় ।

 

বর্তমানে প্রতি মাসে আমদানি করা গাড়ির বিপরীতে গড়ে ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই তা ছাড়িয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার বড় অংশ আসে এই গাড়ি আমদানি থেকেই।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব বিদেশিদের না দিতে হাইকোর্টে রিট

 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার আফরিন জাহান নউমি বলেন, এটা আসলে সার্বিক রাজস্ব তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের একটা রেভিনিউ টার্গেট থাকে। সেই ক্ষেত্রে গাড়ি আসলে একজন গুরুত্বপূর্ণ আমাদের রেভিনিউ ফ্যাক্টর হিসেবে কনসিডার করা হয়।

 

চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে দুটি শেডে ১ হাজার ২৫০টি গাড়ি রাখার জায়গা রয়েছে। দেশে বছরে গড়ে ১২ হাজারের বেশি গাড়ি আমদানি হয়।

 

চট্টগ্রাম সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে বহু ইয়ার্ড আছে এখনো খালি এবং অনেক অনুপযোগী আছে। এগুলো ক্লিন করে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করলে আমার মনে হয় জটিলতা সৃষ্টি হবে না।

 

সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, বন্দরের দুটি শেডে বর্তমানে ১ হাজার ১০০টি গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০৪টি দীর্ঘদিন ধরে নিলামের অপেক্ষায় এবং ১২৯টি এক মাস পার হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে নিলামের জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে।

 

একসময় চট্টগ্রাম নগরীতে ১৫০টির বেশি গাড়ির শোরুম থাকলেও ব্যবসা কমে তা এখন ৫০-এর নিচে নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গাড়ি খালাস কমে গেলে এ শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়বে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন