রোববার (৮ জুন) সকালে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (৯ জুন) সকালে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত হুমায়ুন কবীর বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক ছিলেন এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহার দিন কোরবানির মাংস বিতরণকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের দুই বিবাদমান পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। নিহত হুমায়ুন কবীর চুন্নু গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। তিনি লিয়াকত মাস্টারের দলে থাকা কয়েকজন আত্মীয়কে চুন্নুর দলে নিয়ে আসেন এবং চুন্নুর পক্ষ থেকে কোরবানির মাংস গ্রহণ করেন। বিষয়টি লিয়াকত পক্ষ ভালোভাবে নেয়নি এবং ঈদের পরদিন সকালেই এর জেরে ঘটে রক্তাক্ত ঘটনা।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বানিয়ারী গ্রামের ছাকেনের চায়ের দোকানের সামনে হুমায়ুন কবীর ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় লিয়াকত মাস্টারের নেতৃত্বাধীন প্রতিপক্ষরা। এতে হুমায়ুনসহ ৪–৫ জন আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হুমায়ুনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। তবে আইসিইউ বেড সংকটের কারণে পরবর্তীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে ‘ফাইটার বাবলুকে’ কুপিয়ে হত্যা
নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। আমাদের তিন মেয়ে, এক ছেলে। এখন বাচ্চাদের কীভাবে বড় করব বুঝতে পারছি না। ওরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বিচার চাই।’
নিহতের ভাই মোস্তফা বলেন, ‘আমরা গ্রামে চুন্নুর পক্ষের সমর্থক। ঈদের আগে আমাদের কয়েকজন আত্মীয় চুন্নুর দলে যোগ দেয়ায় লিয়াকত মাস্টার ক্ষিপ্ত হয়। এ কারণেই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।’
ময়না ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বলেন, ‘একটি তুচ্ছ বিষয়! কোরবানির মাংস বিতরণ নিয়ে একজন নিরীহ ভ্যানচালককে হত্যা করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দ্রুত বিচার চাই।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহামুদুল হাসান বলেন, ‘মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’