শেরপুর থেকে বাজিতখিলা-তিনানী হয়ে নালিতাবাড়ী যেতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে সদর থেকে শেখহাটি হয়ে গাজীরখামার দিয়ে নালিতাবাড়ী যেতে দূরত্ব মাত্র ২০ কিলোমিটার। এ কারণে সময় ও খরচ বাঁচাতে অধিকাংশ মানুষ এই পথেই চলাচল করেন।
তবে সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করলেও ভাঙাচোরা আর খানাখন্দে ভরা সড়কটি এখন যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যাতায়াত করতে ভোগান্তিসহ সময়ও অপচয় হচ্ছে তাদের। চলাচলের অযোগ্য এই সড়কটিতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা নিত্যদিনের সঙ্গী।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে শেখহাটি বাজার, চৈতনখিলা বটতলা বাজার এবং গাজীর খামার বাজার সংলগ্ন কয়েক কিলোমিটার রাস্তা প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কোথাও খানাখন্দ, আবার কোথাও দেড় থেকে দুই ফুট গভীর গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ভাঙা রাস্তায় প্রতিদিনই যানবাহনের যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: নেই উন্নয়নের ছোঁয়া, বেহাল দশা পটুয়াখালী বাস টার্মিনালের
গাজীরখামার এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রায় পাঁচ বছর আগে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা সংস্কার করায় বছর না যেতেই আবার ভেঙে যায়। এখন পুরো রাস্তাই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রতিদিনই এই এলাকায় ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজে কমলমতি শিক্ষার্থীরাসহ বয়স্ক মানুষরা বেশী কষ্ট ভোগ করছে।’
গাজীরখামার বাজারের মুদি দোকানি সাদ্দাম মিয়া বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টিতেই দোকানের সামনে হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। গাড়ি গেলে সেই পানি ছিটকে দোকানের ভেতর ঢুকে পড়ে। কাপড়চোপড় ও মালামাল নষ্ট হয়। ব্যবসা করাই কষ্টকর হয়ে গেছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। একাধিক ঠিকাদারের হাত বদল হয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার কাজের দায়িত্ব পান। তবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংস্কারের ফলে চার বছরেই ভেঙে যায় রাস্তা। পরবর্তী বছরগুলোতে পুরো সড়কের অবস্থা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শেরপুর থেকে নালিতাবাড়ীর যাওয়ার এই সড়কটি কোর রোড নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি পাশ হলে এটি একটি আঞ্চলিক হাইওয়ে হবে। তখন শেরপুর থেকে নালিতাবাড়ী যাতায়াতে মানুষের সময় ও খরচ দুইই সাশ্রয় হবে। তবে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় চলতি বছরেই ওই সড়কটি মেরামত করে দেয়া হবে।
]]>