গাজীপুরে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে প্রথম রায় বাস্তবায়ন

৩ সপ্তাহ আগে
দেশে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ কার্যকর হওয়ার পর এই আইনে আদেশ হওয়া মামলার মধ্যে প্রথমবারের মতো গাজীপুরে একটি মামলার রায় ঘোষণা ও সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হয় এবং মূল মালিককে জমির দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়।

 

অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভূমি হুকুম দখল কর্তকর্তা (এলএও) ইশতিয়াক আহমেদ।

 

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. কায়সার খসরু বলেন, ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন কার্যকর হওয়ার পর গাজীপুরে এটিই প্রথম রায় বাস্তবায়ন করা হলো। আদেশ হওয়া অন্যান্য মামলার রায়ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

 

আইনে নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা হওয়ায় ন্যায়বিচার পেয়ে মামলার বাদী ও জমির মূল মালিক শেখ শাহ জামাল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

বাদী ও মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানার পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার মৃত শেখ হাদু রহমানের ছেলে শেখ শাহ জামাল চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি অভিযোগ (পিটিশন মামলা নং-১২/২০২৫) দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেন, সদর মেট্রো থানার চান্দনা মৌজায় তার পৌনে ৯ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. পারভেজ মিয়া, মো. পলাশ মিয়া ও মো. আলাউদ্দিন গং। বাদীকে উচ্ছেদ করে ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করেন তারা।

 

আরও পড়ুন: গাজীপুরে একটি আসন বাড়ল, কমল বাগেরহাটে

 

এ অভিযোগের পর আদালতের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করেন এবং গত ৭ মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে বাদীর আইনানুগ মালিকানা ও দখলের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আদালত তদন্ত প্রতিবেদন, বিবাদীদের জবাব ও অন্যান্য নথি পর্যালোচনা শেষে ২০ জুলাই রায় দেন।

 

রায়ে বলা হয়, বিবাদীরা ১৫ দিনের মধ্যে অবৈধ দখল ছাড়তে বাধ্য থাকবেন, অন্যথায় উচ্ছেদ করে বাদীকে জমির দখল ফিরিয়ে দেয়া হবে। তবে বিবাদীরা আদালতের আদেশ অমান্য করায় গত ২০ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সালমা খাতুন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদকে রায় বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন।

 

এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহযোগিতা করে।

 

জমির দখল ফিরে পেয়ে শেখ শাহ জামাল বলেন, ‘আমি ক্রয়সূত্রে জমির মালিক। ২০২৩ সালে বিবাদীরা আমাকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করে সেখানে টিনশেড ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছিল। দুই বছরের মাথায় মামলা দায়ের করে আমি দ্রুত দখল ফিরে পেলাম। এজন্য অন্তবর্তীকালীন সরকার ও জেলা প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

 

অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘আদালতের আদেশ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। জমির দখল মূল মালিকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন