স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন,
আমার প্রতিনিধিরা আজ গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলিদের সাথে একটি দীর্ঘ এবং ফলপ্রসূ বৈঠক করেছেন। ইসরাইল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তে সম্মত হয়েছে, এই সময়ে আমরা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করার জন্য সব পক্ষের সাথে কাজ করব।
ট্রাম্প আরও বলেন, কাতার ও মিশরীয় প্রতিনিধিরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে, তারা এই চূড়ান্ত প্রস্তাবটি হামাসের কাছে তুলে ধরবে। আমার বিশ্বাস মধ্যপ্রাচ্যের ভালোর জন্য হামাস এই চুক্তিটি গ্রহণ করবে। কারণ চুক্তিটি এর চেয়ে ভালো হবে না - বরং আরও খারাপ হবে। এই বিষয়ে মনোযোগ দেয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ!
ট্রাম্প তার প্রতিনিধিদের নাম জানাননি। ইসরাইলের কৌশলগত বিষয়কমন্ত্রী রন ডার্মার বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। মার্কিন গণমাধ্যমগুলো বলছে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে ইসরাইলি মন্ত্রীর মঙ্গলবার বৈঠক হয়েছে। এরপরই ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রস্তাবে ইসরাইলের সম্মতির ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির ‘সম্ভাব্য সময়’ জানালেন ট্রাম্প
গাজার যুদ্ধবিরতি বিষয়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস বরাবরই বলেছে, যুদ্ধ শেষ করার যেকোনো চুক্তির আওতায় গাজায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত।
তবে ইসরাইলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধ তখনই শেষ হবে, যখন হামাসকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র ও বিলুপ্ত করা যাবে। অবশ্য হামাস অস্ত্র সমর্পণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা'র সোমবার বলেছেন, ‘গাজায় জিম্মি চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে ইসরাইল আন্তরিক।’ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সর্বশেষ প্রস্তাবে তেল আবিবের অবস্থানের বিষয়ে তিনি এমন কথা বলেন।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে গাজায় নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য উইটকফ শিগগিরই মিশরের কায়রো যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজায় ইসরাইলের সংঘাত বন্ধ করার এবং জিম্মি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তেল আবিবকে চাপ দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ইলন মাস্ককে কেন ‘দেশ ছাড়ার’ হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প?
ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা ট্রাম্পের আব্রাহাম চুক্তিতে নতুন কিছু দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের সামনে সুযোগ রয়েছে। জেরুজালেম একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি করে। আমরা আমাদের সৈন্য এবং নাগরিকদের রক্ত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বাস্তবতার জন্য মূল্য দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ইসরাইল আব্রাহাম চুক্তির শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণের বৃত্তকে সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী। আমাদের প্রতিবেশী সিরিয়া এবং লেবাননের মতো দেশগুলোকেও শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণের বৃত্তে যুক্ত করার আগ্রহ রয়েছে। একইসঙ্গে ইসরাইলের অপরিহার্য এবং নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
]]>