বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের এক চিঠির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১০ জুন) ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে লেখা এক চিঠিতে মাহমুদ আব্বাস গাজায় সহিংসতা বন্ধে প্রধান কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মনে করেন, ওই পদক্ষেপগুলো নেয়া হলে যুদ্ধ বন্ধ হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরবে।
চিঠিতে আব্বাস লেখেন, হামাস আর গাজা শাসন করতে পারবে না। ফিলিস্তিনের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে তাদের অস্ত্র এবং সামরিক সক্ষমতা সমর্পণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সহায়তার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাণ গেল আরও ৩৬ ফিলিস্তিনির
তিনি বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী সুরক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজায় আরব বা আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা একটি স্পষ্ট এবং বাধ্যতামূলক সময়সীমার মধ্যে আন্তর্জাতিক সমর্থন, তত্ত্বাবধান এবং গ্যারান্টিসহ, একটি শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করতে প্রস্তুত, যা ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান ঘটাবে এবং সমস্ত অসমাপ্ত এবং চূড়ান্ত মর্যাদার সমস্যা সমাধান করবে।
তিনি আরও বলেন, হামাসকে অবিলম্বে সব জিম্মি এবং বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। এছাড়া গাজার শাসন ক্ষমতা থেকে তাদের বিদায় নিতে হবে। আমরা মনে করি, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত।
চলতি মাসেই নিউইয়র্কে জাতিসংঘের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া একটি সম্মেলনে নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ বিন সালমান। সেখানে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
আব্বাসের চিঠির পর এক বিবৃতিতে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে কথা বলেছে ফ্রান্স। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে দৃঢ় সংকল্প।
আরও পড়ুন: সব মার্কিন ঘাঁটি নাগালের মধ্যে, সংঘাত চাপিয়ে দিলেই প্রতিশোধ
এক বিবৃতিতে এলিসি প্রাসাদ থেকে এ প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের এই বাস্তব এবং অভূতপূর্ব শর্তগুলোকে ফ্রান্স স্বাগত জানিয়েছে। ফ্রান্স মনে করে, দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের জন্য এসব শর্তপূরণ খুবই জরুরি।’
চিঠিতে, আব্বাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ‘এক বছরের মধ্যে’ প্রেসিডেন্ট এবং সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ফ্রান্স দীর্ঘদিন ধরে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে। কয়েক মাস আগে স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং ফ্রান্স-পশ্চিম ইউরোপের এই তিন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তুতি শুরু করেছিল। পরে অবশ্য স্পেন এবং আয়ারল্যান্ড ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ফ্রান্স পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
]]>