গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণে অক্ষমতা স্বীকার করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা’র। নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থি সরকারের ওপরই এর দায় দিয়েছেন তিনি। গিডিওন বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হামলা চালানো সত্ত্বেও ইসরাইল তার যুদ্ধের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।
হামাসের হামলার অজুহাতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। তখন নেতানিয়াহু বলেন, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত এই যুদ্ধ থামবে না। এরপর প্রায় ১৫ মাস ধরে গাজায় নজিরবিহীন বোমাবর্ষণ চলছে।
এতে হাজার হাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনির মৃত্যু। ২০ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। পুরো গাজা উপত্যকা কার্যত ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু হামাসকে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর তাই ইসরাইলি নেতাদের গলায় হতাশার সুর।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে যা বললেন হিজবুল্লাহ প্রধান
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইসরাইলি টিভি চ্যানেল-টুয়েলভকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কয়েক মাস ধরে অভিযান চালানোর পরও আমরা একজন বন্দিকেও জীবিত মুক্ত করে আনতে পারিনি।’
গাজায় সামরিক অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল হামাসের হাতে বন্দিদের মুক্ত করে আনা। যে বন্দিদেরকে ৭ অক্টোবর হামলার দিন আটক করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস।
গিডিয়ন সা’র স্বীকার করে বলেন, ‘হামাসের ওপর আমরা বড় ধরণের আঘাত হেনেছি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধের একটা লক্ষ্যও অর্জন করতে পারিনি।’ ইসরাইলি বিশ্লেষকদের অনেকেই গাজা যুদ্ধে তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় কখন শুরু হচ্ছে যুদ্ধবিরতি, জানাল কাতার
টানা ১৫ মাসের সংঘাতের পর গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি একটি চুক্তি হয়। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে এই চুক্তি কার্যকর হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে হামাস ইসরাইলের ৩৩ বন্দিকে মুক্তি দেবে। বিপরীতে ইসরাইলের কারাগারে আটক সহস্রাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় ইসরাইল গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শুরু করে। এতে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
]]>