গাজায় কবরস্থানই এখন হাজারো জীবিত ফিলিস্তিনির শেষ আশ্রয়স্থল

১ সপ্তাহে আগে
দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজার ঘরবাড়িগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারানো হাজারো ফিলিস্তিনি এখন কবরস্থানের পাশে বা ভেতরে তাঁবু টানিয়ে জীবনযাপন করছেন।

মার্কিন সমর্থিত একটি প্রস্তাবের আওতায় গাজায় হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি কার্যকর আছে। ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও উপত্যকায় মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। কারণ ইসরাইলের নিষেধাজ্ঞায় উপত্যকায় ত্রাণ কার্যক্রম এখনো সীমিত পর্যায়ে চলছে।

 

আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খৌদারি দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহর থেকে জানিয়েছেন, ‘এই কবরস্থান জীবিত মানুষের জন্য নয়। কিন্তু আজ এটি হয়ে উঠেছে সেইসব পরিবারের বাস্থান, যাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই।’

 

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা এখানে ইচ্ছায় নয়, বরং এটাই শেষ খালি জায়গা। তাই এখানে তারা তাঁবু টাঙিয়েছেন। পছন্দের কারণে নয়, বরং বাঁচার তাগিদে কবরস্থানগুলোই এখন শেষ আশ্রয়স্থল।

 

আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী / পশ্চিম তীর দখলের ইসরাইলি পদক্ষেপ গাজা চুক্তিকে হুমকির মুখে ফেলবে

 

উত্তর গাজার বেইত হানুন শহর থেকে বাস্তুচ্যুত ১২ সন্তানের বাবা রামি মুসালেহ জানান, কবরস্থান ছাড়া থাকার তার আর কোনো বিকল্প ছিল না।

 

তিনি বলেন, অভিভাবকদের জন্য এটা ভীষণ মানসিক চাপের। যুদ্ধের মানসিক ক্ষত আরও গভীর হয়, যখন সন্তানদের কবরে ঘেরা পরিবেশে মানুষকে বড় করতে হয়।

 

গাজার আরেক বাসিন্দা সাবাহ মুহাম্মদ বলেন, এখন সব কবরস্থানগুলোর পবিত্রতা হারিয়ে গেছে। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, কবরস্থান হলো মৃতদের জন্য পবিত্র স্থান, এখন জীবিতরা সংকটের নীরব সাক্ষী। পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই, গোপনীয়তা নেই...  আছে শুধু বেঁচে থাকার ন্যূনতম ব্যবস্থা। তিনি আরও বলেন, গাজায়, মৃতদের জমিও এখন জীবিতদের একমাত্র আশ্রয়স্থল।

 

আরও পড়ুন: গাজায় ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করতে ইসরাইল বাধ্য: আইসিজে

 

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের সময় গাজার কমপক্ষে ১৯ লাখ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই সংখ্যা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ। তাদের প্রায় সবাই ১০ বার বা তারও বেশি সময় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

 

ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, গাজায় এখন প্রায় ৬১ মিলিয়ন টন ধ্বংসাবশেষ শহরজুড়ে ছড়িয়ে আছে। এর ফলে বহু এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অনেক পরিবার সেই ধ্বংসস্তূপেই আশ্রয় ও পানি খুঁজছে।

 

গত ১০ অক্টোবর থেকে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ইসরাইল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। বর্তমানে কেরেম শালোম (কারেম আবু সালেম) সীমান্ত দিয়ে গাজার কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে সীমিত ত্রাণ প্রবেশ করছে, তবে উত্তরাঞ্চলের কোনো ক্রসিং এখনো খোলা হয়নি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন