ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি, এই মানবিক প্রচেষ্টা গাজার নিপীড়িত মানুষের জন্য আশার আলো নিয়ে আসবে এবং এটি সমগ্র মানবজাতির সংহতির সাক্ষী হয়ে থাকবে।’
পোস্টটির সঙ্গে তিনি গত ১৫ সেপ্টেম্বর দোহায় অনুষ্ঠিত আরব-ইসলামি শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া তার একটি ভাষণও যুক্ত করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, ফ্লোটিলার জাহাজগুলোতে কোনো অস্ত্র নেই, বরং এটি অবরুদ্ধ গাজার মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটি একটি মানবিক মিশন এবং এই ত্রাণ যেন গাজার উপকূলে নিরাপদে পৌঁছাতে পারে, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি এটাকে সহিংসভাবে ফিরিয়ে দেয়া হয়, তবে তা আমাদের বিবেককে আঘাত করবে। কারণ আমাদের বিবেক সবসময় দুর্বল ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং ক্ষুধার্তকে খাদ্য দিতে শেখায়।’
আরও পড়ুন: গাজার পথে থাকা গ্রেটা থুনবার্গদের নৌবহরে ফের ড্রোন হামলা
চলতি মাসের শুরুর দিকে স্পেনের বার্সেলোনা বন্দর থেকে রওয়ানা হয় গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। এরপর ইতালির সিসিলি ও তিউনিশিয়া উপকূল থেকে আরও কিছু জাহাজ এতে যোগ দেয়। ভূমধ্যসাগরের মধ্যদিয়ে এগিয়ে চলা এই ফ্লোটিলায় প্রায় ৭০টি নৌকা রয়েছে যা খাদ্য, ওষুধ ও শান্তির বার্তা বহন করছে।
প্রায় ১ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী এই মিশনে অংশ নিয়েছেন, যাদের মূল লক্ষ্য হলো গাজার ওপর ইসরাইলি অবরোধ ভেঙে ফেলা। জিএসএফ ইউরোপ, এশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক জোট। এর সকল প্রতিনিধি অহিংসা নীতিতে বিশ্বাসী এবং এই জাহাজগুলোকে গাজায় চলমান সংকটের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সংহতির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
মালয়েশিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা সুমুদ নুসানতারা’র ব্যানারে এই মিশনে যোগ দিয়েছেন, যার নেতৃত্বে আছেন সিনতা গাজা মালয়েশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাদির আল-নুরি কামারুজামান। প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড নিয়ে গঠিত সুমুদ নুসানতারা-এর পৃষ্ঠপোষক।
আরও পড়ুন: গাজা ইস্যুতে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে বসছেন ট্রাম্প
এদিকে ইসরাইল এই ফ্লোটিলাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে ‘জিহাদি ফ্লোটিলা’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করেছে। ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বলেন, ‘এই মানবিক কর্মীদের সন্ত্রাসী ঘোষণা করা উচিত।‘ তবে ফ্লোটিলা সংগঠকরা এসব অভিযোগকে ‘পুরোনো প্রচারণা কৌশল’ ও ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবকদের মতে, তারা গাজার মানুষদের পাশে দাঁড়াতে এসেছেন। যারা যুদ্ধ, বোমাবর্ষণ, অনাহার ও অবরোধের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। জাহাজে মানসিক ও শারীরিক চাপ থাকলেও সবাই সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন। আগে গাজামুখী অন্য ফ্লোটিলাগুলোর ওপর ইসরাইলি হামলা হয়েছে। ২০১০ সালের মাভি মারমারা হামলায় ১০ জন নিহত হন।
]]>