গণতান্ত্রিকভাবে তাদের (আওয়ামী লীগের) বিদায় হতে পারেঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার

৫ দিন আগে
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ, এ নিয়ে কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা, এ বিষয়ে অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ, ভয়েস অফ আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে। এ জরিপটির ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। জরিপের ফলাফল নিয়ে অংশীজনদের মন্তব্য ও বিশ্লেষণ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলা। অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বাংলাদেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে আর ৩৫.৫ শতাংশ চান আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। সম্প্রতি ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার করা এক জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে অধিকাংশ মানুষ মত দিয়েছেন, এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করবেন? গোলাম পরওয়ারঃ আওয়ামী লীগ ইস্যুতে আমরা মনে করি, বিগত ১৫ বছরের তারা দেশ-জাতিসত্তা বিরোধী নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা (দেখিয়েছে), অর্থনৈতিক লুটপাট (করেছে), বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন- অর্থাৎ রাষ্ট্রের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস ও রাজনীতিকরণ করেছে। একটা দেশের সরকার সেই দেশের হাজার-হাজার নাগরিককে হত্যা করেছে শুধু মাত্র অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে প্রায় ২ হাজার ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। ৪০ হাজার লোক আহত হয়েছে। যাদের কাছে ভোটাধিকার নিরাপদ নয়, যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, 'ফ্যাসিবাদের' প্রবক্তা- তাদেরকে রাজনীতি মানুষ আর গ্রহণ করবে কিনা, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, সেটা জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণের মতামত তো আপনারা পেয়ে গেছেন। সেইজন্য আমি জনগণের মতামতকে শ্রদ্ধা করি। দেশে একটা ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সেখানে এমন একটা পন্থায় আমাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত, যাতে জনরায়ের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির অবসান হতে পারে। গণতান্ত্রিকভাবে তাদের (আওয়ামী লীগের) বিদায় হতে পারে। আমরা নিজেদের জন্য যে আইনকে খারাপ মনে করি...যখন জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেই সময় সারা দেশ-দুনিয়া এর প্রতিবাদ করেছে। আমরা সেটাকে বেআইনি, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক বলেছি। ফলে, নিজেদের জন্য যেটাকে আমরা অপছন্দ করি, পরের জন্যও সেটাকে অপছন্দ করি। কিন্তু জনরায় ও জনমতের ভিত্তিতে কারও কার্যক্রম প্রত্যাখিত হয় তার প্রতি শ্রদ্ধা রাখি। আওয়ামী লীগ সেইভাবে বাংলাদেশে থেকে বিদায় হবে। ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতাদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করার পক্ষে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৬.৮ শতাংশ। এদের মধ্যে ৫৪. ৫ শতাংশ চান আওয়ামী লীগের এই নেতাদের আজীবনের জন্য রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা হোক। দল হিসেবে অধিকাংশ মানুষ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার পক্ষে হলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা দেখতে চায় ৪৬.৮ শতাংশ মানুষ যাদের অর্ধেকের বেশি আওয়ামী লীগ নেতাদের আজীবন নিষিদ্ধের পক্ষে। এ বিষয়টি নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ জানতে চাই। গোলাম পরওয়ারঃ এটা একটা জনমত। মানুষ তাদের নিজস্ব চিন্তা-বিশ্লেষনের ভিত্তিতে মতামত দিয়েছে। কোনো দলের নেতৃত্বে কে আসবে সেটা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।  অন্য আরেকটি দলের নেতৃত্বে কে ভালো, কে মন্দ- তা আমাদের বিচারের বিষয় নয়। সেটা আজকের রাজনীতির মুখ্য বিষয়ও না। বিষয় হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি এই দেশে চলবে কিনা, তাদের বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা ও অগণতান্ত্রিক কতৃত্ববাদী শাসন চলবে কিনা- এই ক্ষেত্রে জনগণের যে মতামত, তার প্রতি আমরা শ্রদ্ধা রাখি। (এই সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদিত্য রিমন।)
সম্পূর্ণ পড়ুন