খেলনা শিল্প রফতানিতে নতুন সম্ভাবনা: সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চায় ডিসিসিআই

১ সপ্তাহে আগে
বাংলাদেশের খেলনা শিল্পে রফতানির নতুন সম্ভাবনা দেখা দিলেও নীতি সহায়তার অভাবে এ শিল্পে সুবিধা করতে পারছেন না দেশীয় উদ্যোক্তারা। তাদের অভিযোগ, খেলনা আমদানির চেয়ে এর কাঁচামাল আমদানিতেই শুল্ক অনেক বেশি। তাই খেলনা শিল্পে খরচ বাড়ছে। এনবিআরের সদস্যরা জানান, শুল্ক ছাড় দেয়ার ক্ষমতা রাজস্ব বোর্ডের নেই। আইএমএফের শর্ত থাকায় বছরের মাঝখানে শুল্ক ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগই নেই।

এদিকে খেলনা শিল্পের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।


বিশ্বে খেলনার বাজার প্রায় ৩২৫ বিলিয়ন ডলারের। বিশাল এ বাজারে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি ছিল মাত্র ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।


মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘রফতানি বহুমুখীকরণ: খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন এবং রফতানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপের আলোচনায় এসব মত উঠে আসে।


খেলনা রফতানিতে ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন প্রিমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিক লিমিটেডের উপনির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ছাঁচ ও নকশার প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে চাই। স্থানীয় ছাঁচ যেভাবে তৈরি হচ্ছে, তা মানসম্পন্ন করছে না।’


পেটেন্ট, শিল্প–নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরের পেটেন্ট ও শিল্প–নকশা বিভাগের পরিচালক অশোক কুমার রায় বলেন, ‘স্বত্ব ও মেধাস্বত্বের বিষয়ে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ বেশি দেখা যায়। স্বত্ব ও ট্রেডমার্ক ব্যবস্থা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরাপত্তার বলয় তৈরি করবে। এর ফলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক নতুন বাজারে দেশের প্রতিষ্ঠান সুযোগ পাবে।’


পরিবেশ অধিদফতরের বর্জ্য ও রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ক্ষতিকর রাসায়নিক মুক্ত কাঁচামাল দিয়ে খেলনা তৈরি করা হোক-এটাই চায় অধিদফতর।
খেলনা শিল্পের প্রসারে নীতি সহায়তার তাগিদ দেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। 


তিনি বলেন, ‘বিশ্ব খেলনা বাজারের আকার ১০২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩০ সালে ১৫০ বিলিয়ন ছাড়াবে। অথচ বাংলাদেশ এ খাতে রফতানি করছে মাত্র ৭৭ মিলিয়ন ডলার। নীতি সহায়তার অভাব, কাঁচামালে উচ্চ শুল্ক, বন্ড সুবিধার অনুপস্থিতি, অবকাঠামোর ঘাটতি এবং টেস্টিং সুবিধার সংকটের কারণে সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না।’


আরও পড়ুন: মার্কিন শুল্কের খড়গে খেলনা শিল্পে চরম অনিশ্চয়তা!


সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস: নীতি ও আইটি) মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর মার্টিন ডওসন।


এনবিআর সদস্য মুবিনুল কবীর বলেন, ‘তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ 


তিনি জানান, রাজস্ব বোর্ড নীতিমালা সহজ করা ও বন্ড সুবিধা প্রদানের বিষয়ে কাজ করছে। তবে তিনি উদ্যোক্তাদের শুধু প্রণোদনার দিকে না তাকিয়ে নিজেদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।


ব্রিটিশ হাইকমিশনের মার্টিন ডওসন বলেন, ‘বাংলাদেশে উৎপাদিত খেলনার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে ব্রিটেনে এখাতের রফতানি বহুগুণে বাড়বে। ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি রুলস অব অরিজিন শর্ত সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা বাংলাদেশি রফতানিকারকদের জন্য সহায়ক হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন