খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ

১ সপ্তাহে আগে
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও সঞ্চয়ের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা ৩৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ উত্থাপিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাবে এ তথ্য জানা যায়।

 

তিনি বলেন, উৎপাদিত কৃষি পণ্যের অপচয় রোধ করাসহ সার্বিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্যাকেজিংসহ হিমাগার ও কোল্ড চেইন কাঠামো শক্তিশালী করা, কৃষি পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি পণ্যের সাপ্লাই চেইনের সব অংশীজনের একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেইজ তৈরি করা, বিশেষায়িত কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা, ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে ৩ হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা

 

দারিদ্র্য বিমোচন এবং নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলমান রয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার ৯০১টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তালিকাভুক্ত চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে প্রতিকেজি ১৯ টাকা দরে গম বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট’ কর্মসূচির আওতায় ১০ লক্ষ ৪০ হাজার দুস্থ মহিলাকে মাসে ৩০ কেজি হারে চাল প্রদান করা হচ্ছে।  

 

আগামী অর্থবছরে খাদ্য গুদামের ধারণ ক্ষমতা ৩৭ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা এবং খাদ্যশস্য ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।

 

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবারের বাজেটটি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।

 

এবার জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। এটি দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট।। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।

 

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে। এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এবং অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়া হয়েছে।

 

বিগত বছরে প্রতিবার বাজেট দেয়া হতো জুনের প্রথম দিকে যেকোনো বৃহস্পতিবার। পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী ৭ জুন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই এবার বাজেট উপস্থাপন করলেন অর্থ উপদেষ্টা।

 

আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি

 

বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে আগামীকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায়। বরাবরের মতো এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

 

এবারের বাজেট উপস্থাপনে সংসদ না থাকায় কোনো সংসদীয় আলোচনা বা বিতর্ক হবে না। তবে ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর জনমত নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে, আর সেই মতামতের ভিত্তিতে বাজেটের চূড়ান্ত রূপ দেয়া হবে। চূড়ান্তকরণের পর যেকোনো একদিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

 

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়ার পরঅধ্যাদেশ জারি করে বাজেটটি কার্যকর করবেন  রাষ্ট্রপতি, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন