সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য নিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ডঃ এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “তিনি কোনো কথা না বুঝে বলেননি।”
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান বলেছিলেন, “নিজেরা কাদা-ছোঁড়াছুঁড়ি, মারামারি ও কাটাকাটি করলে দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। এই দেশ আমাদের সবার, আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই।”
সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, “সেনাপ্রধান আমার জন্য অনেক উঁচু স্তরের লোক। তিনি একটি বাহিনী চালাচ্ছেন। তিনি কোনো কথা না বুঝে বলেননি। বাকিটা ইন্টারপ্রিটেশন কী—আপনারা জানুন।”
“আমি যতটা উনাকে চিনি, ভেরি স্ট্রেট ফরওয়ার্ড ম্যান। যা বলার মানুষের মুখের ওপর বলার মতো লোক। সো আই হ্যাভ এ লট অফ রেসপেক্ট ফর হিম,” যোগ করেন তিনি।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “সেনাবাহিনী প্রধান কী বলেছেন না বলেছেন, সেটার ব্যাখ্যা আমি দিতে পারব না। সেটা উনিই বলতে পারবেন।”
প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি যেভাবে সম্বোধন করেছেন, সেটা পারেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “এটা আপনারা উনাকেই জিজ্ঞাসা করেন।”
সেনাপ্রধানের বক্তব্য
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যদি ‘কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি’ বন্ধ করা না হয়; তাহলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে বলেও মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, “দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার নেপথ্যে কিছু কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে—আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত। একজন-আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদগারে ব্যস্ত। এটা একটা চমৎকার সুযোগ অপরাধীদের জন্য। যেহেতু আমরা একটি অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে বিরাজ করছি, সেহেতু তারা ভালোভাবেই জানে যে এই সময় এসব অপরাধ করা গেলে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। সে কারণে এই অপরাধগুলো হচ্ছে।”
ওয়াকার-উজ-জামান আরও বলেন, “আমরা যদি সংগঠিত থাকি, একত্রিত থাকি, তাহলে অবশ্যই এটা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই—এগুলো দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ অতীতে করেছে। খারাপ কাজের সঙ্গে অসংখ্য ভালো কাজ করেছে। আজ দেশের যে স্থিতিশীলতা, দেশকে যে এতগুলো বছর স্থিতিশীল রাখা হয়েছে, এটার কারণ হচ্ছে এই সশস্ত্র বাহিনীর বহু সেনা সদস্য, সিভিলিয়ান—সবাই বিলে এই সংস্থাগুলোকে কার্যকর রেখেছে।”