নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দায়িত্ব গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা না পেরোতেই আজ (১ জুন) গিয়েছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। সেখানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বোর্ড এবং ক্রিকেট সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ক্রীড়া উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাপ শেষে বিসিবির পরিচালকদের নিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশনে যান বিসিবি সভাপতি। সেখানে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশলাদি এবং অতীত স্মৃতি রোমন্থনের পর আলোচনা করেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে। সেখানেই উঠে আসে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর কোচিংয়ে আগ্রহের বিষয়টিও।
ক্রিকেট নিয়ে পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে 'ক্রিকেট ইন বাংলাদেশ' নামে একটি প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরেন বুলবুল। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, 'এখানে আমরা তিনটি কাজ করব..... শতভাগ ট্রাস্ট, শতভাগ প্রোগ্রাম ও শতভাগ রিচ। বাংলাদেশে শতভাগ রিচ করব, আমাদের ট্রাস্ট থাকবে, আমাদের প্রোগ্রাম থাকবে। এই ট্রিপল সেঞ্চুরিটা করার জন্য ক্রিকেট বোর্ড তিনটা প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে।'
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসছে পাকিস্তান, প্রাথমিক সূচি চূড়ান্ত
তিনি আরও বলেন, 'আমরা স্পিরিট অব ক্রিকেট আপগ্রেড করব। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, সবার জন্য হাই পারফরম্যান্স। শুধু ক্রিকেটার নয়, যারা কর্মকর্তা আছে, তাদের কাজও যেন হাই পারফর্মিং হয়। আর তিন নম্বর হচ্ছে, সারা দেশব্যাপী কানেক্ট করব। ক্রিকেট বোর্ড শুধু মিরপুরে বসে থাকবে না। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আঞ্চলিক সংস্থার কাঠামো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটা হয়নি। আমরা যেভাবে হোক, বুরোক্রেটিক হয়ে হোক, এনএসসিও আমাদের সমর্থন দিচ্ছে। এর আগেও আমরা শুধুমাত্র ক্রিকেট নিয়ে দেশের সব জায়গায় আঞ্চলিক সংস্থার মতো করে ছড়িয়ে যাচ্ছি খুব শিগগিরই। আইসিসির কাছে এটা আমাদের একটা প্রতিশ্রুতি ছিল। এখন এটা আমাদের এক নম্বর প্রায়োরিটি। অবশ্যই ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্সও এর সঙ্গে আছে।'
আঞ্চলিক ক্রিকেট নিয়ে নিজের পরিকল্পনায় বুলবুল বলেন, 'আমরা অভিযোগ করি যে, ঢাকায় বসে চট্টগ্রাম বা রাজশাহীর দল বানানো হয়। এটা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। এটা হচ্ছে আল্টিমেট। তবে তৃণমূল ক্রিকেটে যেন গ্রামের একটা ছেলে ক্রিকেট খেলতে পারে। এরপর সে উপজেলা, জেলায় খেলতে পারে। পরে ক্রমান্বয়ে যেন জাতীয় দলে আসতে পারে। এটা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নয়, ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ করব। আমরা রিজিওনগুলোকে কিন্তু বোর্ড থেকে কোনো অনুদান দেবো না। তাদেরকে পারফরম্যান্স, ক্রিকেটারের সংখ্যা, সুবিধাদি, কোচ, আম্পায়ারদের সংখ্যা মিলিয়ে অর্জন করে নিতে হবে। সব কিছু মিলিয়ে তারা যেভাবে কাজ করবে, সেভাবে তাদের ফান্ডিং দেওয়া হবে। এই ফান্ডিং মডেলটাও আমরা করে দিচ্ছি। '
আরও পড়ুন: সভাপতি হওয়ার পর প্রথমবার উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ, কী আলোচনা হলো?
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাবেক তারকাদের ক্রিকেটের উন্নয়নে ব্যবহারের দিকে জোর দিয়েছেন বুলবুল। সেখানেই উঠে আসে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর কোচ হওয়ার প্রসঙ্গ।
তিনি বলেন,'নান্নু ভাই, বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। আকরাম ভাই, বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। লিপু ভাই, হাবিবুল বাশার... তারা তো একেকজন কিংবদন্তি। তারা সবচেয়ে বড় এডভান্টেজ। তারা মাঠের চরিত্র, উইকেটের চরিত্র, ড্রেসিং রুমের চরিত্র- সব জানেন। এই ধরনের সাব্জেক্ট ম্যাটার এক্সপার্টদের আমাদের অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। তবে এটা ঠিক যে একজন খেলোয়াড় সরাসরি ভালো এডমিনিস্ট্রেটর হয় না বা ভালো কোচ হয় না। সেই ব্যবস্থাগুলো করব। এখানে বলা উচিত কিনা জানি না। আমি বিসিবিতে জয়েন করার আগেই আমার সঙ্গে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ যোগাযোগ করেছে। তারা আন্তর্জাতিক কোচ হতে চায়। এই ট্রেনিং এডুকেশন প্রোগ্রামগুলো আমরা ক্রিকেট বোর্ডের মাধ্যমে রান করব ইনশাল্লাহ।'