কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবিতে যশোর শিক্ষাবোর্ডে বিক্ষোভ, হট্টগোল

১ সপ্তাহে আগে
আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবিতে যশোর শিক্ষাবোর্ডে বিক্ষোভ করেছে সাতক্ষীরা শালিখা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৪ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এফবি কবে অংশ নেন।

এসময় তাদের সাথে শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হট্টগোল বাধে। শিক্ষার্থীদের দাবি নিকটবর্তী কেন্দ্র বাতিল করে ২৬ কিলোমিটার দূরে কেন্দ্রে করায় পরীক্ষা দেয়া কষ্টসাধ্য হবে।


পরীক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাতক্ষীরা শালিকা ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষার্থীরা সাড়ে তিন কিলোমিটারের দূরে আর কে বি কে হরিস চন্দ্র স্কুল কলেজে কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আসছেন। এবার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় হঠাৎ কেন্দ্রটি যশোর বোর্ড পরিবর্তন করে ২৬ কিলোমিটার দূরে কপিলমনি কলেজে স্থানান্তর করেছে। একটি প্রত্যন্তঅঞ্চলে কেন্দ্র স্থানান্তর করায় বিপাকে পড়েছেন করেজটির ২৪১ পরীক্ষার্থীরা।


পরীক্ষার্থীরা আরও জানান, স্থানান্তর হওয়া কেন্দ্রটিতে নৌপথে গেলেও দুরত্ব ১৫ কিলোমিটার। এ ক্ষেত্রে কপোতাক্ষ নদী পার হতে হবে। নদী পারাপার হওয়ার জন্য ভালো নৌকা নেই। এমন পরিস্থিতিতে স্থানান্তর হওয়া কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে পূর্বের কেন্দ্র করার দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন: পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ: শিক্ষা উপদেষ্টা

অমিত নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্র হয় আর কে বি কে হরিস চন্দ্র স্কুল কলেজে। এই কলেজে যদি কোন সমস্যা হয়, তাহলে আমাদের কলেজের নিকটবর্তী কলেজ রয়েছে সেখানে কেন্দ্র করুক। শালিকা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র করা হয়েছে কপিলমনি কলেজে। এটি ২৬ কিলোমিটার দূরে। যদি রাস্তা কমাতে যায়, তাহলে শিক্ষার্থীদের কপোতাক্ষ নদী পার হতে হবে। সেই নদীতে কোন নৌকা চলে না। আছে সাময়িক ডিঙি নৌকা। এতো ঝুঁকি নিয়ে কি পরীক্ষা গ্রহন করা কি ঠিক হবে বোর্ডের।’


সেতু নামে অপর এক শিক্ষার্থী জানান, ‘নদী পার হলেও পরের রাস্তাগুলো মাটির সড়ক। এখন বর্ষাকাল। ঝড় বৃষ্টির মৌসুমে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। যে কারণে তারা কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।


রিয়াদ আহম্মেদ নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের সমস্যা নিয়ে প্রথমে কলেজের শিক্ষকদের জানাই। এরপর কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে গত মাসে আমরা বোর্ডে আসি। বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে না বলে জানান। একইসাথে ওই দিন আমাদের শিক্ষকদের অপমাণ করা হয়। তাই কলেজের শিক্ষকেরা আমাদের সঙ্গে আর আসেনি। আমরা আজ সকাল থেকে এখানে বিক্ষোভ কর্মসূচি করছি। কিন্তু তাদের সাথে দফায় দফায় কথা বলার আশ্বাস দিলেও বোর্ড কর্তৃপক্ষ একপর্যায়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এমনকি তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।’


এ বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মোসম্মৎ আসমা বেগমের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি। সবশেষ দুপুর ৩টার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাইরে এসে শিক্ষার্থীদের কলেজ ক্যাম্পাসে বাসের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন। নির্দিষ্ট সময়ে তাদের কেন্দ্র পৌঁছে দেয়া হবে জানালে শিক্ষার্থীরা ফিরে যান।
 

আরও পড়ুন: জুলাইয়ে কলেজ শিক্ষকদের অনলাইন বদলির আবেদন শুরু: শিক্ষা উপদেষ্টা

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডক্টর আব্দুল মতিন বলেন, বোর্ড কেন্দ্র পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর কলেজ থেকে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। আজ পাঁচবারের বেশি সময় কল দিয়েছি। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ ফোন ধরছেন না।


তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার দিনগুলোতে কলেজ থেকে বাস সার্ভিস দিবো। সকাল ৮টায় শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরীক্ষা শেষে কলেজে পৌঁছে দেওয়া হবে। বিষয়টি আমরা মনিটরিংয়ের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেও মনিটরিং করানো হবে। শিক্ষার্থীরা এ পদক্ষেপে আশ্বস্ত হয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন