খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি বন্ধেরদাবি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিককার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায়এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় মঙ্গলবারের হামলায় জড়িতদের বহিষ্কার, বহিরাগতের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসা খরচসহ শিক্ষার্থীদেরনিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার ও নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কুয়েট উপাচার্য এখনো অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন।
মঙ্গলবার কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদেরকুয়েটের মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তিকরা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে পাঁচ জনকে।
কুয়েটের ঘটনা তৈরি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল মব: ছাত্রদল
এদিকে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জাতীযতাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকনাছির উদ্দীন নাছির খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সংঘর্ষ প্রসঙ্গে বলেছেন, “ঘটনাটি তৈরি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল মব। এর নেতৃত্ব দিয়েছেন কুয়েট বৈষম্যবিরোধীছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. ওমর ফারুক। কেন্দ্রীয়ভাবে সেটিমনিটরিং করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বাআহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।”
তিনি বলেন, "ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ অগাস্টের পরাজিত শক্তি এবং ৫ অগাস্টের পূর্ববর্তী সময়ে যারা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগী হিসেবে তাদের সব অপকর্মের বৈধতা প্রদানে ভূমিকা রেখেছিল, সেসব শিক্ষার্থী নামধারী অপশক্তি বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গোপনে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক চর্চায় বাধাগ্রস্ত করে মব সংস্কৃতির মাধ্যমে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সৃষ্টি করছে এবং নাগরিক হিসেবে শিক্ষার্থীদেরপ্রাপ্য গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে অতীতের ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী সংগঠনের ন্যায় অগণতান্ত্রিক আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে।"
“এসব ঘটনার ধারাবাহিকতার পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল খুলনা প্রকৌশলও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে সেটি নিয়ে অনলাইনে ও অফলাইনে সত্য ঘটনাকে আড়াল করে অপপ্রচারের মাধ্যমে ছাত্রদলের নামে মিথ্যা অপবাদ চারিদিকে ছড়ানো হচ্ছে।”