কুষ্টিয়ায় বহু বছর পর গাদন খেলায় মাতল এলাকাবাসী

মাঠের চারদিকে চিকন দড়ির সঙ্গে রঙিন কাগজে ঘেরা। চারিদিকে ভিড় করে আছেন নানাবয়সি শত শত নারী - পুরুষ দর্শক। তাদের মাঝে দুই দলে বিভক্ত হয়ে ১০ জন ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করছেন। এক দল ঠেকাচ্ছেন। অপরদল ঝুলাঝুলি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছেন। এসব দেখে আনন্দিত দর্শকরা করতালি দিয়ে খেলোয়ারদের উৎসাহ দিচ্ছেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ায় কুমারখালীর বাগুলাট ইউনিয়নের নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সরেজমিন গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।

 

সেখানে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী গাদন খেলার আয়োজন করা হয়। হারানো ঐতিহ্যকে যুব সমাজের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এমন খেলার আয়োজন করে দুধকুমড়া যুব সংঘ।

 

খেলায় দুই - শূন্য গাদনে বিবাহিত দলকে পরাজিত করে বিজয়ী লাভ করেন অবিবাহিত দল। খেলা শেষে বিজয়ীদের হতে পুরস্কার তুলে দেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।

 

আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে বিয়ে করতে কুষ্টিয়ায় চীনা যুবক, শি জিং থেকে নাম বদলে হলেন ‘সোহান’

 

এ বিষয়ে গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ নজরুল ইসলাম বলেন, ২০ বছর আগেও এই মাঠে গাদন, হাডুডু, ফুটবলসহ নানান খেলা হতো। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় হায়ারে গাদন খেলেছি। আর এখন সেসব খেলা নেই।

 

কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, এখনকার ছেলেপেলে মাঠে আসলেও খেলাধুলা করে না। মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকে। মাঠে খেলাধুলা করলে শরীর-মন ভাল থাকে।

 

ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, হারোনা এবং ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সরকারি ও সামাজিকভাবে উদ্যোগ নেয়া দরকার। অন্তত ২০ বছর পরে আবার গাদন খেলা দেখলাম। ভালই লাগছে।

 

খেলার আয়োজক বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, হারানো ঐতিহ্যকে যুব সমাজের মাঝে ফিরিয়ে আনতে এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে বিবাহিত বনাম অবিবাহিত দলের গাদন খেলার আয়োজন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের আয়োজন করা হবে।

 

আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ১৫০০ ভ্যানচালককে বিনামূল্যে দেয়া হলো লাইসেন্স

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, গাদন গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলা। নানাবিদ কারণে ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামীণ ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

 

]]>