এদের মধ্যে তিতাস উপজেলায় তিন জন, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় তিন জন ও বুড়িচং উপজেলায় একজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাত জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদ উল্লাহ জানান, সোমবার (৯ জুন) সকালে তিতাস উপজেলার তুলাকান্দি গ্রামে দুই বাকপ্রতিবন্ধী মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মনু মিয়া নামের বাকপ্রতিবন্ধী এক বাবা। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা বাবা ও দুই মেয়েকে উদ্ধার করে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক দুই মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় দুই মেয়ে মারা গেলেও বাবা বেঁচে আছেন।
নিহতরা হলেন কুমিল্লা তিতাস উপজেলার তুলাকান্দি গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা (১০) এবং ফাতিহা (৬)
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবা মনু মিয়া এবং মেয়ে মনিরা ও ফাতিহা তিনজনই প্রতিবন্ধী। শরীরে ইনফেকশন হওয়ায় মনু মিয়া দীর্ঘদিন বেকার। তাছাড়া মনু মিয়া ও তার দুই মেয়ে তিনজনেই বাকপ্রতিবন্ধী। শারীরিক অবস্থা, দারিদ্র্যতা ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তার ভেতরে হতাশা কাজ করছিল। এ কারণেই মনু মিয়া দুই মেয়েসহ নিজেও কীটনাশক ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: রেললাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের মরদেহ উদ্ধার
একই উপজেলার মাছিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকায় ঋণের বোঝা সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মুর্শিদ মিয়া (৫৫) নামে এক ব্যক্তি। সোমবার সকাল ১১ টায় বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে মরদহাটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মুর্শিদ মিয়া মাছিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত তাজির মিয়ার ছেলে। নিহতের স্ত্রী ও একটি সন্তান রয়েছে। মুর্শিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিতাস থানার উপ-পরিদর্শক কমল কৃষ্ণ সাহা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত মুর্শিদ মিয়া ফেরি করে জীবিকা নির্বাহ করত। সম্প্রতি বেশ কিছু এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও এলাকার লোকজন তার কাছে টাকা পাওনা ছিল। ঈদের আগে পাওনাদারদের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও টাকা দিতে পারেনি। এতে করে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। হয়তো এর কারণেই আত্মহত্যা করতে পারে।
এদিকে ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ নরী-শিশুসহ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। সোমবার (৯ জুন) সকালে উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে অন্তরা আক্তার (২৫) নামে প্রবাস ফেরত এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ। রোববার রাত ১১টার পর কোনো এক সময় ফাঁসিতে ঝুলে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন পুলিশ।
নিহত অন্তরা আক্তার ওই এলাকার সিরাজ ডাক্তারের বাড়ির ভ্যান চালক কামাল হোসেনের মেয়ে। তিনি সৌদিআরব প্রবাসী ছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
ব্রাহ্মণপাড়ায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে টুটুল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত টুটুল (২৮) উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের সিংগারচরা এলাকার মোস্তফার ছেলে। তিনি তার নানাবাড়ি শিদলাই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে বসবাস করতেন। পেশায় তিনি একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক ( তদন্ত) টমাস বড়ুয়া বলেন, ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা আমাদের কেউ জানায়নি। তবে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বিষ খাইয়ে দুই মেয়েকে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা বাকপ্রতিবন্ধী বাবার
ব্রাহ্মণপাড়ায় বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ডুবে হোসাইন নামের ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার সকালে উপজেলার সাহেবাবাদ ইউনিয়নের টাকই এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু হোসাইন ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শঙ্খজিৎ সমাজপতি।
এদিকে বুড়িচংয়ে রেল লাইনের পাশ থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন থানা পুলিশ।
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের বাকশিমুল পূর্বপাড়া এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে বুড়িচং থানা পুলিশের একটি দল। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুড়িচং থানার উপরিদর্শক মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান।
তিনি জানান, খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌছান তিনি। এ সময় রেল লাইনের পাশের একটি পরিত্যক্ত জমি থেকে অর্ধগলিত যুবকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে নিহত যুবকের বয়স ৩০ হতে পারে।
এছাড়া দেহটি দেখে ধারণা করা যাচ্ছে অন্তত এক সপ্তাহ আগে মৃত্যু হয়েছে। শরীরের অনেক অংশই পচে গলে গেছে।