ওষুধ সংকটে গাইবান্ধার কমিউনিটি ক্লিনিক

২ দিন আগে
প্রয়োজনীয় ওষুধ সংকটে মুখ থুবড়ে পড়েছে গাইবান্ধার গ্রামীন স্বাস্থ্য সেবার প্রধান ভরসাস্থল কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা। ওষুধের নিয়মিত বরাদ্দ কমিয়ে দেয়ায় ও চাহিদা অনুয়ায়ী পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় মাসের অর্ধেক দিনেই শেষ হচ্ছে বরাদ্দকৃত ওষুধ।

ফলে ক্লিনিকে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল নিম্ম আয়ের মানুষের। গ্রামের দরিদ্র মানুষদের বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ দেয়ায় এসব ক্লিনিক সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা হয়ে উঠলেও এখন ওষুধ সংকটে বিপাকে পড়েছে এসব ক্লিনিকের ওপর নির্ভরশীল মানুষ।


এসব ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে রোগীরা জানান, সর্দি, জ্বর, আমাশয়, ডায়রিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, মাথাব্যথাসহ নানা রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ নেন তারা। প্রতি মাসের প্রথম দিকে ক্লিনিক থেকে বিভিন্ন রোগের কিছু পরিমাণ ওষুধ পাওয়া গেলেও মাসের শেষের দিকে ফিরতে হয় খালে হাতে। সম্প্রতি এ সমস্যা বেড়ে গেছে কয়েকগুন সঙ্গে অ্যমোক্যাসিলিন, কট্রিম, মেট্রো, পিনিসিলিনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ একেবারেই পাচ্ছেন না তারা।

আরও পড়ুন: ফের আন্দোলনে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা, দুর্ভোগে রোগীরা

আমাশয়, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল গ্রামীন নিম্ম আয়ের মানুষ।


সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের হাশেম বাজার গ্রামের মো. জয়নুল মিয়া বলেন, ‘আগে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ওষুধ পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা সাধারণ মানুষ টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় ভুগছি। ক্লিনিকে যেয়ে ওষুধ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে।’


সদর উপজেলার পশ্চিম কোমরনই গ্রামের ফরহাদ হোসেন জানান, সর্দি, জ্বরের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপসহ গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ আগে দেয়া হতো। কিন্তু এখন আগের মতো ওষুধ নেই।


মাসের ১০ দিন না যেতেই ওষুধ সংকটের কথা স্বীকার করে গাইবান্ধা সদরের কিশামত বালুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) মো. আতাউর রহমান জনান, প্রত্যকটি ক্লিনিকে প্রতি মাসের জন্য ২৭ প্রকার ওষুধ দুটি বক্স দেয়া হতো। যা দিয়েই স্থানীয় রোগীদের সামাল দিতে বেগ পেতে হতো। বেশ কিছু দিন থেকে দুটির জায়গায় দেয়া হচ্ছে একটি। যে কারণে মাসের অর্ধেক যেতেই শেষ হয় ওষুধ।

আরও পড়ুন: ৫ দফা দাবিতে কুমিল্লায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে রোগীরা


গাইবান্ধা সদরের হাশেম বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) মো. ময়নুল ইসলাম জানান, দুটি বক্সের জায়গায় দেয়া একটি বক্স থেকেও সম্প্রতি আবার বাদ দেয়া হয়েছে ২৭ প্রকার ওষুধের মধ্যে ৭ প্রকার মানুষের অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ। যা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের। রোগীদের সাথে মাঝে মধ্যে কথাকাটি হচ্ছে।


ওষুধ সংকটে রোগীদের হয়রানির কথা স্বীকার করে গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডা. কানিজ সাবিহা (সম্প্রতি ওএসডি হওয়া) জানান, সরকারি সিদ্ধান্তে সম্প্রতি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে এন্টিবায়োটিক ওষুধ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পূর্বের চেয়ে এসব ক্লিনিকের নির্ধারিত এলাকার জনসাধারণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব জনগণের চাহিদার তুলনায় ওষুধ বরাদ্দ কম হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।


গাইবান্ধা জেলার ৭ উপজেলায় ৩১১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন