মঙ্গলবার (২৭ মে) গভীর রাতে মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন: পৌর শহরের মোংলা মাছ বাজারের সাবেক সভাপতি ওলিয়ার রহমানের ছেলে সুমন হোসেন, ‘এমভি সেজুতি’ জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুল ইসলাম ও শহরের ময়লাপোতা মোড় এলাকার সুমন হাওলাদার।
কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সূত্র জানায়, গত সোমবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১০/১২ জনের একদল ডাকাত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ ‘এমভি সেজুতি’ নামে ওই বাণিজ্যিক জাহাজে ঢুকে প্রথমে নাবিকদের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে। এ সময় তাদের মারধর করে জাহাজের মেশিনারিজসহ মূল্যবান বিভিন্ন প্রকারের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মোংলায় বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির চেষ্টা, ৫ জলদস্যু আটক
খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের একটি অনুসন্ধানি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। এ সময় কোস্ট গার্ড সদস্যরা জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে আলাপ করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোংলা এলাকায় একাধিক টিম দিয়ে অভিযান চালায়। এরপর মঙ্গলবার রাতে প্রথমে মূলহোতা ডাকাত সুমন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে কোস্ট গার্ড।
তার দেয়া তথ্যমতে পৌর শহরের অন্যান্য এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুমন হোসেন ও এই জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. সিরাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাণিজ্যিক জাহাজের ডাকাতি ও মালামাল লুট করার কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তারা। পরে শহরের ময়লাপোতা মোড় এলাকার সুমনের গোডাউন থেকে ডাকাতির মালামাল উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: মোংলা বন্দরে নাবিকদের হাত-পা বেঁধে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতি
উদ্ধার হওয়া মালামালের মধ্যে রয়েছে: জাহাজের ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরণের স্পেয়ার পার্টস, বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারি চার্জার ছাড়াও অন্যান্য জাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রয়েছে। যার অনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
এ দিকে, মোংলা কোস্ট গার্ডের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও, জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, নাবিক ও আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক ও স্থানীয়রা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত।
জাহাজে থাকা অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭ মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পাচ্ছিল না। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগেও জাহাজ থেকে ডাকাত গ্রুপের কাছে মেশিনারিজ পার্টস ও বিভিন্ন মেশিনারিজ মালামাল বিক্রি করেছিলেন জাহাজে থাকা নাবিকরা।