গত ২৬ জুন বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেহেতু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে একটি নীতিমালার আওতায় বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। এ অবস্থায় বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য বদলি নীতিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, সফটওয়্যার ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অনলাইনে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা সর্বোচ্চ তিনটি কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে বদলির জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করে আবেদন করতে পারবেন।
শিক্ষকরা প্রথম যোগদানের পর চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করার জন্য যোগ্য হবেন। বদলি নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর কর্মে নিয়োজিত থাকার পর পরবর্তী বদলির আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ঈদ বোনাস বাড়ল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের
নীতিমালা অনুযায়ী, একজন শিক্ষক কর্মজীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে দুইজন শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন। যেকোনো শূন্য পদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। এছাড়া স্বামী কিংবা স্ত্রীর কর্মস্থলকে বিবেচনায় আনতে হবে।
গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী- শুধু মাউশির মহাপরিচালক (ডিজি) পারস্পরিক বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করতে পারবেন। নীতিমালায় এই বদলি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারে হবে বলে জানানো হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সেই সফটওয়্যার তৈরির কাজ চলছে।
জারি করা নীতিমালায় বদলির সাধারণ শর্তে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্যপদের চাহিদা বা বিবরণ ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে প্রকাশ করবে, প্রকাশিত শূন্যপদের বিপরীতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বদলির আবেদন আহ্বান করবে। সমপদে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে বদলির জন্য ১ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।
আবেদনকারী শিক্ষক তার চাকরির আবেদনে উল্লেখ করা নিজ জেলায় বদলির জন্য আবেদন করবেন। তবে নিজ জেলায় পদ শূন্য না থাকলে নিজ বিভাগের যেকোনো জেলায় শূন্য পদের বিপরীতে বদলির আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর
বদলির আবেদন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া যেভাবে হবে- বদলির সমগ্র প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর সফটওয়্যার তৈরি ও অনলাইন আবেদনের ফরমেট নির্ধারণ করবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স আগের প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ট্রান্সফার হবে।
পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বদলি পদায়নের বিষয়টি নিষ্পন্ন করতে পারবেন। বদলিকৃত শিক্ষকের এমপিও ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা আগের মতো বজায় থাকবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. খান মঈনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, সরকারি হাইস্কুলের জন্য ডায়নামিক ওয়েবসাইট ও বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার জুলাই মাসে চালু হতে যাচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক বদলি নীতিমালা অনুসারে সেই সফটওয়্যার থেকে তথ্যাদি গ্রহণের মাধ্যমে তাদের বদলি করা হবে। তাই সকল শিক্ষককে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী কার্যকর তথ্য প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
]]>