এমএইচ ১৭ বিমান ধ্বংসের ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করে রায়

২ সপ্তাহ আগে
এক দশক আগে ইউক্রেনে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ ১৭ বিমান ভূপাতিত করার ঘটনায় রাশিয়াকে দায়ী করে রায় দিয়েছেন ইউরোপের সর্বোচ্চ মানবাধিকার আদালত। ইউক্রেন এই রায়কে ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন’ বলে স্বাগত জানিয়েছে। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ একে ‘প্রতীকী’ বলে অভিহিত করেছে। খবর এপির।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই প্রায় ৩০০ যাত্রীসহ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বিধ্বস্ত হয় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ ১৭। সেদিন নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী বিমানটি।

 

বিমানটি যখন ইউক্রেনের পূর্বের দোনবাস অঞ্চল অতিক্রম করছিল, তখন একটি মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্র এটাকে আঘাত করে। ওই সময় ওই এলাকায় রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং এতে থাকা ৮০ জন শিশু এবং ১৫ জন ক্রুসহ ২৮৩ জন যাত্রীর সবাই নিহত হয়।

 

এ ঘটনায় ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালত ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটসে চারটি মামলা দায়ের করে কিয়েভ ও নেদারল্যান্ডস। এর মধ্যে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যদিয়ে যা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রূপ নেয় যা গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত রয়েছে।

 

আরও পড়ুন: পুতিনের পাঠানো ক্ষেপণাস্ত্রে ভূপাতিত হয় এমএইচ ১৭

 

বুধবার (৯ জুলাই) সেই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এবারই প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক আদালতের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ার বিমান ভূপাতিত করার জন্য রাশিয়াকে সরাসরি দায়ী করা হলো।

 

রায়ে বিচারকরা বলেছেন, ২০১৪ সালে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ ১৭ ভূপাতিত করা থেকে শুরু করে ২০২২ সালে মস্কোর পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের পর হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস এবং ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণ পর্যন্ত-আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাপক লঙ্ঘনের জন্য রাশিয়া দায়ী।

 

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন বলেছে, তারা একে ‘প্রতীকী রায়’ হিসেবে উপেক্ষা করবে। তবে ইউক্রেন এটাকে ‘ঐতিহাসিক ও অভূতপূর্ব’ রায় বলে প্রশংসা করেছে এবং বলেছে যে, এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির জন্য একটা ‘অবিশ্বাস্য বিজয়’।

 

এদিকে ইউক্রেনে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, সীমান্তবর্তী লুৎস্ক শহর ও এর আশপাশের কয়েকটি অঞ্চলে সাত শতাধিক ড্রোন ও ১০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে রুশ সেনারা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ঘটেছে প্রাণহানি। আহত হয়েছেন অনেকে। কিয়েভ দাবি করেছে, এদিন বহু ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে।

 

আরও পড়ুন: পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা / রেকর্ড ৭০০ ড্রোন দিয়ে হামলা চালালো রাশিয়া!

 

সীমান্তবর্তী শহরটি পশ্চিমা সামরিক সাহায্যের প্রবেশদ্বার হিসেবেই পরিচিত। হামলার মাত্রায় এতটাই আতঙ্ক ছড়ায় যে পোল্যান্ড তাদের যুদ্ধবিমান তৎপর করে আকাশসীমায় নজরদারি বাড়ায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার উদ্দেশ্য শান্তির বার্তা নয়, বরং হামলার ক্ষমতা দেখানো।

 

পাল্টা পদক্ষেপে রাশিয়ার কয়েকটি অঞ্চলে অর্ধশতাধিক ড্রোন দিয়ে হামলা চালায় ইউক্রেন। হামলায় কুরস্ক শহরে কয়েকজন হতাহত হন। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ইউক্রেনের বেশিরভাগ ড্রোনই সফলভাবে প্রতিহত করা গেছে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও রাশিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির দাবি করা হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন