তুর্কি ও আরব মিডিয়ার বরাত দিয়ে দ্য জেরুজালেম পোস্ট এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসমা সম্প্রতি রাশিয়ার আদালতে আবেদন করেছেন এবং মস্কো ছাড়ার জন্য বিশেষ অনুমতি চেয়েছেন। তার আবেদন বর্তমানে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন করছে বলে জানা গেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৭৫ সালে লন্ডনে সিরিয়ান বাবা-মায়ের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন আসমা। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। তবে ২০০০ সালে আসমা সিরিয়ায় যান এবং একই বছর আসাদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বাবা হাফেজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার ক্ষমতায় আসেন বাশার আল-আসাদ। এরপর ২৪ বছর শক্ত হাতে শাসন করেন সিরিয়া।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার বিরুদ্ধে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চায় তুরস্ক
তবে ১২ দিনের ঝটিকা আক্রমণে গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও আরও কিছু বিদ্রোহী গোষ্ঠী। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিমানে করে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাশার আল-আসাদ মস্কোকে আশ্রয় লাভ করেন। সেখানে বসবাস করলেও তার ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়। তাকে মস্কো ত্যাগ করার অনুমতি দেয়া হয়নি বা রাজনৈতিক কোনো তৎপরতা চালানোর অনুমোদন দেয়া হয়নি।
রুশ কর্তৃপক্ষ তার সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে। তার সম্পদের মধ্যে ছিল ২৭০ কেজি স্বর্ণ, ২ বিলিয়ন ডলার, মস্কোতে ১৮টি অ্যাপার্টমেন্ট।
বাশার আল-আসাদের ভাই মাহের আল-আসাদকে রাশিয়ায় আশ্রয় দেয়া হয়নি। তার অনুরোধ এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে বলে সৌদি ও তুর্কি মিডিয়া জানিয়েছে। মাহের ও তার পরিবার রাশিয়ায় গৃহবন্দী রয়েছেন।
পতনের পর সিরিয়া থেকে বাশার আল-আসাদের রাশিয়ায় চলে যাওয়াটা ছিল অপরিকল্পিত। গত ১৬ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমন দাবি করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, বাশার আল-আসাদ সিরিয়া ছেড়ে যেতে চাননি।
টেলিগ্রামে সিরিয়ান প্রেসিডেন্সি অ্যাকাউন্ট থেকে বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ‘সিরিয়া থেকে আমার প্রস্থানের পরিকল্পনাও ছিল না বা এটি যুদ্ধের শেষ ঘণ্টায়ও ঘটেনি। যেমনটি কেউ কেউ দাবি করেছেন; তার বিপরীতে, ৮ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত আমি দামেস্কে ছিলাম এবং আমার দায়িত্ব পালন করেছি।’
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় পররাষ্ট্র-প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে বিদ্রোহীরা
বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়, ৮ ডিসেম্বর সকালে আসাদ সিরিয়ার হামিমিমে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে চলে যান এবং ঘাঁটি আক্রমণের মুখে পড়লে রাশিয়া তাকে সরে যেতে বলে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ার কোনো কার্যকর উপায় না থাকায়, মস্কো অনুরোধ করেছিল যে ঘাঁটির কমান্ড ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় আসাদকে রাশিয়ায় অবিলম্বে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করবে। এটি দামেস্কের পতনের একদিন পরে ঘটেছিল।
বিবৃতিতে আসাদ আরও দাবি করেন, ‘দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাওয়ার সময় আমি পদত্যাগ বা আশ্রয় চাওয়ার কথা বিবেচনা করিনি। কোনও ব্যক্তি বা দলও এমন প্রস্তাব আমাকে দেয়নি। বরং সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়াই একমাত্র কর্মপন্থা আমার মনে হয়েছে।’
]]>