পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি ও গণছুটি ঘোষণার ফলে খুলনা অঞ্চলের অন্তত পাঁচশত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটিতে গিয়েছেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি খুলনা জেলা কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাড়ে পাঁচশ কর্মকর্তা-কর্মচারির মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন অফিস করছেন। অধিকাংশই ছুটিতে চলে গিয়েছেন।
বুধবার সকালে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২৪১ জন ছুটির দরখাস্ত দেন। পরবর্তীতে দুপুরের পর থেকে অন্যরাও দরখাস্ত জমা দিয়ে ছুটিতে চলে যান।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণছুটির কারণে বিভিন্ন এলাকায় গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের এ গণছুটি দীর্ঘায়িত হলে এবং দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কোনো সমাধান না হলে পল্লী বিদ্যুৎ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশের লুণ্ঠিত গোলাবারুদ উদ্ধার, গ্রেফতার ২
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা জানিয়েছেন, চার দফা দাবি তারা দীর্ঘদিন জানিয়ে আসছেন কর্তৃক্ষকে। তবে কতৃপক্ষ বা সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না মেলায় বাধ্য হয়ে ছুটিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাইকগাছার একজন কর্মকর্তা বলেন, যৌক্তিক দাবিগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনা সাড়া মিলছে না। কতদিন ছুটিতে থাকবো সেটা এখনই বলতে পারছি না। তবে দাবি মানা না হলে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলনে নামতে হবে আমাদের।
চার দফা দাবি হলো, আরইবি-পিবিএস একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং সব চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত (মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক ও পৌষ্য বিলিং সহকারী) কর্মীদের নিয়মিতকরণ, মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল, সব সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্ত করা এবং অন্যায়ভাবে বদলি করা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করে বাস্তবায়ন করা।
আরও পড়ুন: খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একদিনে ৬ মরদেহের ময়নাতদন্ত
২০২৫ সালের ১৭ আগস্ট থেকে অদ্যাবধি হয়রানিমূলকভাবে চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত করা ও সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত আদেশ বাতিল করে আগের কর্মস্থলে পদায়ন করা। জরুরি সেবায় নিয়োজিত লাইন ক্রুদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিকালীন যোগদান করতে না পারা পাঁচজন লাইনক্রুকে আগের কর্মস্থলে যোগদানের ব্যবস্থা করা। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি খুলনা জেলার ব্যবস্থাপক তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, বুধবার সকাল থেকে আমার কাছে বিভিন্ন উপজেলা থেকে খবর আসতে থাকে সেখানকার কর্মকর্তা কর্মচারিরা ছুটির দরখাস্ত জমা দিয়ে অফিস ত্যাগ করছেন। এখন অফিসে হাতে গোনা কয়েকজন কর্মকর্তা বাদে বাকি সবাই ছুটিতে চলে গিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে সেবা প্রদানে কোনো সংকট তৈরি হয়নি। তবে অফিসে টেকনিক্যাল ম্যান না থাকায় অফিস কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। পাশাপাশি কোথাও কোনো লাইনে ত্রুটি বা সমস্যা হলে সমাধানের কোনো পথ খোলা থাকছে না।
]]>