নির্বাচনের এই তারিখ পরিবর্তনের ইঙ্গিতকে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল সাধুবাদ জানিয়েছে। আগামী রমজানের আগে নির্বাচন হলে চলমান রাজনৈতিক সংকট কেটে যাবে বলে মনে করছেন বিএনপির নেতারা।
তবে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নির্বাচনকে যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তাতে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি প্রধান্য না পাওয়ায় হতাশ তারা।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘একটি দলের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ পুনর্বিবেচনা করার মধ্য দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার আগে জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা রাজনৈতিক দল, শহীদ পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন নিয়ে সরকার দুটি শর্ত দিয়েছে। তারা বলছে, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে এবং বিচার ও সংস্কার পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে। বিষয়টি আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখি। দুটি শর্ত সম্পন্ন হলে নির্বাচনের তারিখ ও সময় নিয়ে আমাদের মেজর আপত্তি নাই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জনগণ যাদের ক্ষমতায় বসাবে তারা শক্তিশালী হয়ে যাবে। ফলে তারা বিচার প্রক্রিয়াও করতে পারবে, সংস্কারও করতে পারবে। নির্বাচন দ্রুত হলে চলমান সংকট নিরসন সম্ভব।’
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষার্ধের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। কারণ তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত ৪৫-৫০ দিন সময় লাগে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এই নিরপেক্ষ সরকার মূলত একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই সরকারের প্রধানতম কর্ম এবং এজেন্ডা হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সে হিসেবে নাম কি হলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। কাজ হবে এটা, নিরপেক্ষতা বজায় রাখে যেন সরকার।’
আরও পড়ুন: কী কথা হলো ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠকে?
ভোটের সময় পুনর্বিবেচনা নিয়ে যারা হতাশা প্রকাশ করছেন তাদেরও সমালোচনা করেন বিএনপির নেতারা।
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পরও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে সামনে সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক শক্তি৷ তাদের সঙ্গে আলাপ না করলে এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যে না পৌঁছালে অস্থিরতা বাড়বে৷ যারা এ বৈঠকের সমালোচনা করছেন তারা বাস্তবতা বিবর্জিত কাজ করছেন৷’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস, তারিখ ও বৈঠক শেষ কথা না রাজনীতিতে৷ সামনে নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে৷ জুলাই প্রোক্লেমেশন ঘোষণার পর সংকট আরও প্রকট হতে পারে৷ এর জন্য দরকার রাজনৈতিক ঐকমত্য।’
]]>