রফতানিকারকদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কোনো ডেডিকেটেড এয়ার শিপমেন্ট না থাকায় এবং আর এ থ্রি জোন না থাকায় তাদের বাধ্য হয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা ভারতের কলকাতা বিমানবন্দরের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে ভারত বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় চট্টগ্রামে আর এ থ্রি জোন চালু করা এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন তারা।
বিজিএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চাই ঢাকার মতো চট্টগ্রাম বিমানবন্দরটাকেও যেন রফতানির হাব হিসেবে ব্যবহার করা হয়।’
বিজিএমইএ-এর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় যে, আমাদের তৈরি পোশাক এয়ারশিপমেন্ট করতে হলে ঢাকার বিমানবন্দর কিংবা কলকাতায় পাঠাতে হবে। চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে এখানে আলাদা আর এ থ্রি জোন এবং নিরাপদ গুদামঘর হওয়া জরুরি।’
ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকাগামী কার্গো ফ্লাইট চালুর লক্ষ্যে আর এ থ্রি জোন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে শাহ আমানত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, ‘সম্পূর্ণ সিস্টেমকে আর এ থ্রি জোনের আওতায় আনার পরিকল্পনা আমাদের প্রস্তুত। আমরা শিগগিরই কাজ শুরু করব।’
আরও পড়ুন: শাহ আমানতে শুরু হচ্ছে এয়ার শিপমেন্ট, রফতানির পালে নতুন হাওয়া
এই জোনে থাকবে নিরাপত্তা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী, এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম, ডগ স্কোয়াড এবং ৬ স্তরের নিরাপত্তা বলয়।
জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু নির্দিষ্ট চাহিদা রয়েছে, যেগুলো পূরণ না করলে ইউরোপে সরাসরি কার্গো ফ্লাইট চালানো যাবে না।’
২০০৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে সীমিত আকারে কার্গো বিমান চলাচল করলেও করোনাকালে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ভারতের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হওয়ায় শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে পুনরায় এয়ারশিপমেন্ট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপ ও আমেরিকা। আর এ থ্রি জোন চালু হলে এই পণ্যগুলোকে মধ্যপ্রাচ্য ঘুরে না গিয়ে সরাসরি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো সম্ভব হবে। এতে সময় ও খরচ উভয়ই কমবে।
ব্যবসায়ীদের মতে, আর এ থ্রি জোন বাস্তবায়নের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে রফতানির নতুন হাব হিসেবে গড়ে তোলা গেলে দেশের রফতানি খাত আরও গতিশীল হবে।
]]>