এই প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে-স্বয়ংক্রিয় নম্বর প্লেট শনাক্তকরণ ক্যামেরা, গতি নির্ণায়ক স্পিড গান, ডিজিটাল মেসেজিং সাইনবোর্ড, মনিটরিং সেন্টার ও জরিমানার ব্যবস্থা।
এ উদ্যোগে খুশি যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এতে শুধু দুর্ঘটনা নয়, সময়, খরচ ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।
ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি টানলেন যাত্রী নাজমুল হোসেন, যিনি নিয়মিত ফরিদপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াত করেন চাকরির কারণে। “গত বছর একবার সামনে থাকা বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে উঠে পড়ে।
তিনি বলেন, ‘সেদিন আমি সামান্যর জন্য বেঁচে গেছি। এখন শুনছি গতি মাপার যন্ত্র আর ক্যামেরা বসানো হচ্ছে, এটা দারুণ খবর। আমরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে চাই।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নিহত ৫
ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম, যিনি মাওয়া ঘাটে একটি কাচামাল পরিবহনের ব্যবসা পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের ট্রাকগুলো সময় মতো না পৌঁছালে পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। এখন নিয়ম ভেঙে কেউ দৌড়াবে না, আবার কেউ ইচ্ছেমতো গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতেও পারবে না। এতে আমাদের ডেলিভারি টাইম নিশ্চিত হবে।’
গৃহবধূ সুলতানা পারভীন, যিনি মাঝেমধ্যেই সন্তানসহ মাওয়া থেকে ঢাকায় চিকিৎসার কাজে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, এই রাস্তায় মহিলা ও বাচ্চা নিয়ে চলাচল অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ভয়ে রাতে বের হতাম না। যদি ক্যামেরায় সব দেখা যায়, তাহলে অপরাধীরাও ভয় পাবে।’
এদিকে হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, আইটিএস পুরোপুরি কার্যকর করতে হলে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরাসরি সংযোগ থাকা আবশ্যক।
শ্রীনগরের হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ‘ডিভাইস থাকলেই হবে না, নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পুলিশের হাতে ডেটা থাকতে হবে।’
অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন জানিয়েছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যেই পুরো ৭১ কিলোমিটারে আইটিএস চালু করতে কাজ চলছে। তখন গতি, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এরইমধ্যে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ মাওয়া থেকে পাঁচ্চর পর্যন্ত ক্যামেরা স্থাপন শেষ করেছে। আর পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত বাকি ২০ কিলোমিটারে কাজ চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতেও, এই প্রযুক্তিনির্ভর পরিবহন ব্যবস্থায় দেশ প্রথমবারের মতো একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব এক্সপ্রেসওয়ে পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার এক্সপ্রেসওয়েগুলোতে কেন বাড়ছে দুর্ঘটনা, কী পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশে ২০টি সিসিটিভি, ৩০টি ভিডিএস, চারটি ভিএমএস ও আটটি এলসিএস স্থাপন করা হয়েছে।
আর ধোলাইখাল থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার অংশে ২৪টি সিসিটিভি, ৬০টি ভিডিএস, ৮টি ভিএমএস স্থাপন করা হয়েছে।
মাওয়া থেকে পাঁচ্চর পর্যন্ত অংশে ৪০টি সিসি ক্যামেরা, ২০টি ভিডিএস, ২ টি ভিএমএস ও ৩টি আরডব্লিউআইএস স্থাপন করা হয়েছে।
]]>