আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জানিয়েছে, এ পদ্ধতিতে পাসপোর্ট গ্রহণের সুযোগ নেই।
এদিকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে পাসপোর্ট নেয়া ব্যক্তির অনুকূলে পুলিশের বিশেষ শাখার দেয়া প্রতিবেদনের সত্যতা মিলেছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারে। অন্যদিকে, পুলিশের বিশেষ শাখায় তথ্য চেয়ে সময় সংবাদের করা আবেদনের অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ।
চলতি বছরের মার্চ মাসে অনলাইনে ব্যক্তিগত পাসপোর্টের আবেদন করেন নাঈম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি। ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ ও অনলাইন আবেদনের কপি নিয়ে যান মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। ছবি তুলে আঙুলের ছাপ দিতে গেলে বাধে বিপত্তি। ওই সময় নাঈম জানতে পারেন তার এনআইডির অনুকূলে এর আগে একটি পাসপোর্ট ইস্যু করেছে পাসপোর্ট অধিদফতর। যার প্রকৃত মালিক অন্য কেউ।
আরও পড়ুন: করোনা /হিলি ইমিগ্রেশনে মেডিকেল টিম, মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষেধ
জালিয়াতির মাধ্যমে নেয়া পাসপোর্টের আবেদনের কপি হাতে আসে সময় সংবাদের। সেখানে দেখা যায়, নাঈমের নামে থাকা এনআইডি কার্ডের ছবি ও ঠিকানা পরিবর্তন করেছে প্রতারক। পরিবর্তন করা হয়েছে স্থায়ী ঠিকানাও।
সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে সময় সংবাদ। পাসপোর্টে দেয়া ঠিকানায় গিয়ে দেখা যায়, যার নামে পাসপোর্ট সেই ব্যক্তি এ বাড়িটিতে কখনই ছিলেন না।
এবার মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে, ডেটাবেইজের সঙ্গে প্রতারকের দেয়া তথ্য মিলিয়ে দেখে সময় সংবাদ। ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পাতার এ পাসপোর্টটি সরবরাহ করে মোহাম্মদপুর আঞ্চলিক অফিস। এনআইডি জালিয়াতি করে পাসপোর্ট কীভাবে নেয়া সম্ভব হলো? দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, দায় চাপালেন পুলিশের বিশেষ শাখার রিপোর্টের ওপর।
জানা যায় যে, ওই পাসপোর্ট নম্বর-A17707965, পাসপোর্ট এনরোলমেন্টের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০২৪। প্রদানের তারিখ- ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ সম্ভাব্য সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২৫। পাসপোর্টের ধরণ- সাধারণ। ছবি, ঠিকানা ও আঙুলের ছাপ যাচাই করার সুযোগ থাকার পরও এমন ঘটনা কিভাবে ঘটেছে? তথ্য চেয়ে করা আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সময় সংবাদকে লিখিত বক্তব্য পাঠায় পাসপোর্ট অধিদফতর। সেখানেও বলা হয়, এসবির প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পাসপোর্ট ইস্যু করার কথা।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বাড়ায় বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আবারও সতর্কতা
ভেরিফিকেশন রিপোর্ট সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করলে লিখিত আবেদন করতে বলে এসবি অফিসও। ২৮ এপ্রিল সময় সংবাদের আবেদন গ্রহণ করলেও উত্তর পাঠায় ২৩ দিন পর। উত্তরে বলা হয়, একজনের তথ্য ব্যবহার করে অন্যজনের পাসপোর্ট গ্রহণে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের দায়-দ্বায়িত্ব রয়েছে। পাশাপাশি এটা অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার গাফিলতি ও অদক্ষতার কারণে হতে পারে। এরজন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।
তবে জাল-জালিয়াতি করে পাসপোর্ট নেয়া ব্যক্তির অবস্থান এখনও অজানা।
]]>