শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৩টায় একইস্থানে ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মী সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। ঘটনার পরপরই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেল ৩টায় কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির দুই গ্রুপ একইস্থানে কর্মী সম্মেলন ডাকে। দুই গ্রুপের সম্মেলনেই বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। একইস্থানে দুই গ্রুপের কর্মী সম্মেলন থাকায় সকাল থেকেই কাশীল ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। পরে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলামের পক্ষের বাথুলীসাদী ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) মানিক মোহাম্মদ তোহা গ্রুপের নেতাকর্মীরা পরিষদের সামনে কর্মী সম্মেলন করার লক্ষে চেয়ার ও টেবিল বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এ সময় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুর রউফ ও বাথুলীসাদী ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাঞ্চন খানসহ কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুর রউফ, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাঞ্চন খান ও সাধারণ সম্পাদক মানিক মোহাম্মদ তোহাসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার পর পরিষদ চত্বরে দুই পক্ষের কর্মী সম্মেলন বন্ধের ঘোষণা দেয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মানিক মোহাম্মদ তোহা বলেন, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন করার জন্য পরিষদের সামনে চেয়ার ও টেবিল বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এসময় হঠাৎ করে অন্য গ্রুপের রফিকুল ইসলাম ও আব্দুর রউফসহ কয়েকজন নেতাকর্মী এসে বাধা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা আমার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে। পরে আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। ঘটনার পর পুলিশ এসে দুই পক্ষেরই কর্মী সম্মেলন বন্ধ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ, নিহত ১
কাশিল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ১৫ দিন আগে আমরা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছি। হঠাৎ করে কাজী শহীদুল ইসলাম গ্রুপের মানিক মোহাম্মদ তোহাসহ কয়েকজন নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী সম্মেলন বাধাগ্রস্ত করার জন্য হামলা চালায়। এ ঘটনায় আমিসহ চারজন আহত হয়েছি। এ ঘটনার পর কর্মী সম্মেলনের তারিখটি বাতিল করা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমরা ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করি। পরে সেখানে চেয়ার ও টেবিল বসাতে গেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান গ্রুপের নেতাকর্মীরা আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন বলেন, ‘একইস্থানে বিএনপির দুই গ্রুপ কর্মী সম্মেলনের ডাক দেয়। পরে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’