সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বাণিজ্যিক এলাকা পুরান বাজারের প্রধান সড়ক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে আছে। এতে যাত্রী, চালক ও পথচারীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। কমে গেছে ক্রেতার উপস্থিতি, ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দিনে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
যাত্রার মাঠ এলাকার সড়ক ও আশপাশেও হাঁটুপানির সৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতি হামিদ আকন্দ সড়ক, ডা. অখিল বন্ধু সড়ক, শহীদ বাদল সড়ক, কালীবাড়ি রোড, মিলন সিনেমা সড়ক, শহীদ মানিক সড়ক, মন্টু ভূঁইয়া সড়ক ও শহীদ বাচ্চু সড়কসহ প্রায় সব প্রধান সড়কেই। এক ঘণ্টার বৃষ্টির পানি নামতেই লেগে যাচ্ছে পুরো একদিন। দীর্ঘদিনের এমন পরিস্থিতিতেও কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততা থাকায় সমস্যার সমাধান মিলছে না।
অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভা প্রতিবছর কর, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম-মৃত্যু সনদ, রাজস্বসহ বিভিন্ন খাতে শত কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। এছাড়া যত্রতত্র জলাশয় ভরাট করে গড়ে উঠেছে বহুতল ভবন, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। এর ফলে দুর্ভোগ বাড়ছে যাত্রী, চালক ও পথচারীদের; ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীও।
জানা যায়, মাদারীপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৩৪টি মৌজায় প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস। ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পৌরসভাটি ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মর্যাদা লাভ করে।
পুরান বাজার এলাকার পথচারী রাব্বি মৃধা বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করাই দায়। চারপাশে শুধু পানি। এখানে কেনাকাটায় এসে বিপদে পড়েছি।’
আরও পড়ুন: অতিবৃষ্টিতে যশোরে সবজির ক্ষতি, বিপাকে চাষিরা
মুক্তনগর মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ‘ড্রেনের মুখগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। পৌরসভার লোকজন যদি এগুলো না দেখে, তাহলে আমাদের ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’
ইজিবাইক চালক রিপন তফাদার বলেন, ‘সড়কগুলোতে খানাখন্দক, তার ওপর পানি জমে আছে। এই দুই কারণে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।’
জুতা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে কাস্টমার আসছে না। ব্যবসা অনেকটা বন্ধের পথে।’
কাঁচামাল ব্যবসায়ী মিঠু হোসেন বলেন, ‘হাঁটুসমান পানি জমে আছে প্রধান সড়কে। এমন অবস্থায় ব্যবসা করা দুঃসাধ্য।’
মাদারীপুর পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হলো ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়া। অনেকেই পলিথিনে করে ময়লা ফেলে ড্রেনে দিচ্ছেন, ফলে মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পৌরসভার কর্মীরা বৃষ্টির মধ্যেও কাজ করে যাচ্ছেন, অল্প সময়েই পানি নেমে যাবে বলে আশা করছি।’
]]>