সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বনানী ক্লাব ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন নির্বাহী কমিটি গঠনের পর (এএএবি) এটিই প্রথম নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট। অনুষ্ঠানে প্রায় ৬০টির অধিক বিজ্ঞাপনী সংস্থার স্বত্বাধিকারী, সিইও, অ্যাসোসিয়েশন এবং কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এই ইভেন্টে বিশেষ বক্তা হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আকতার।
অনুষ্ঠানটি কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি নাজিম ফারহান চৌধুরী মডারেট করেন। সভাপতি সানাউল আরেফিনের বক্তব্যের মাধ্যমে ইভেন্ট শুরু হয়। তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন শিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন এবং এই শিল্পের বিকাশে সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে বিজ্ঞাপন শিল্পে কাজ করছি। এখন সময় এসেছে আমাদের নিজের দায়িত্ববোধ থেকে একটি সচেতনতার ক্যাম্পেইন পরিচালনার, যা মানুষের মনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। ভালো ঘটনা সবসময় ভালো, সেটি মানুষকে বুঝানো জরুরি। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো মিলে আমরা এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেশের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ বক্তা মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডের গুরুত্ব তুলে ধরে ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আকতার বলেন, সৃজনশীলতাকে কেন্দ্র করেই এখনও বিজ্ঞাপন জগৎ আবর্তিত হচ্ছে। বিজ্ঞাপনের লেখনী কতটা কার্যকর বা এটি দর্শকদের সঙ্গে কতটা সংযোগ স্থাপন করে তার শুরু গবেষণার মাধ্যমে নির্ধারিত হলে আরও কার্যকর হবে। এখনকার এই নতুন সময়ের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় ডেটা এবং ছোট ডেটা ব্যবহারের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করা। এজেন্সি এবং ক্লাইন্টেরদের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়েনের চেয়ে পারস্পরিক বুদ্ধিবৃত্তিক বোঝাপড়া উন্নয়নের দিকে জোর দেবার ব্যাপারেও আলোকপাত করেন তিনি।
জেনরেল সেক্রেটারি সৈয়দ আহসানুল আপন এএএবির ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা, অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ হিসেবে, শিল্প ও সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে চাই। আমরা ন্যায্য নীতিমালা তৈরি, উদ্ভাবনের প্রচার, দক্ষতা উন্নয়ন এবং বিজ্ঞাপনী খাতকে শক্তিশালী করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কাজ করব। সঠিক ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ট্যাক্স আয় বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে চাই।’
আরও পড়ুন: শতকোটি ডলার ক্লাবে নাবিল গ্রুপ
সহ-সভাপতি নাজিম ফারহান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের বিজ্ঞাপনী শিল্প এখন বড় ধরনের পরিবর্তন এবং উত্থানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই শিল্পকে তার সর্বোচ্চ কার্যক্ষমতায় পরিচালনা করতে হলে সবার শক্তি এবং অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করতে হবে। কারণ, আমরা সেই খাত, যা বাকি পুরো অর্থনীতিকে সচল রাখে।’
১৯৭৮ সালে যাত্রা শুরু করা অ্যাডভার্টাইজিং এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ দেশে যেসব প্রতিষ্ঠান নিয়মতান্ত্রিকভাবে টেলিভিশন, খবরের কাগজ, ডিজিটাল, ইভেন্ট, আউটডোর, অ্যাকটিভেশন ইত্যাদি নানা মাধ্যমে যে কমিউনিকেশন ব্যবসা করছেন তাদের পরিচালক পর্ষদের (স্বত্বাধিকারী) একজন নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে (এএএবি)-এর সদস্য হতে পারেন।
এই সংস্থা বিজ্ঞাপন শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে আসছে এবং ক্লায়েন্ট, সরকার ও সমাজের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। ইভেন্টে উপস্থিত অতিথিরা এই নেটওয়ার্কিং হাবের গুরুত্ব নিয়ে ইতিবাচক মতামত প্রকাশ করেছেন এবং বিজ্ঞাপনী শিল্পের পেশাদারদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনী শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞাপন জগতের অগ্রজ গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, রামেন্দু মজুমদার, সারা যাকের, মুনির আহমেদ খান ও ইউসুফ হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ বিজ্ঞাপন শিল্পের ভবিষ্যতকে আরও শক্তিশালী করবে এই আশা নিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
]]>